অর্থনীতি

অনলাইনে খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে হচ্ছে নীতিমালা

ঢাকা চেম্বারের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৩ কোটি ৬০ লাখ। আর ফেসবুকভিত্তিক বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৩১২ কোটি টাকা।

ফেসবুকে খাঁটি পণ্য সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে পেজ খুলে খাদ্যপণ্য বিক্রি করছে কয়েক লাখ ‘এফ-ভিত্তিক’ শপ। শতভাগ খাঁটি মধু, ঘি, মিষ্টি, দই, পনির ও সরিষার তেল সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এভাবে কয়েক বছরে দেশে এফ-ভিত্তিক বা ই-কমার্সভিত্তিক ব্যবসার বিপুল প্রসার ঘটেছে।

সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিনির্ভর এ ধরনের উদ্যোগ আশাব্যঞ্জক। তবে আশঙ্কার বিষয়টি হচ্ছে, এ ধরনের ব্যবসার পুরোটাই পরিচালিত হচ্ছে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে। তাই নীতিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

দেশে ই-কমার্স ব্যবসায়িক উদ্যোগের প্রকৃত সংখ্যা কত, কারা কীভাবে ব্যবসা করছেন, সরবরাহ করা পণ্য কতটা মানসম্মত, প্রতারিত হলে ক্রেতা কার কাছে প্রতিকার চাইবে, সে বিষয়ে কোনো নীতিমালা বা তদারকি প্রতিষ্ঠান নেই।

এফভিত্তিক অনলাইন শপে বিক্রি হওয়া খাদ্যপণ্যের প্রায় শতভাগের বিএসটিআইয়ের মানসনদ নেই। অনলাইনে ব্যবসা করা বেশিরভাগ উদ্যোগের ট্রেড লাইসেন্সও নেই।

সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) এক অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৯৯ ভাগ অনলাইন শপের সুনির্দিষ্ট অফিস বা ঠিকানা নেই। কেবল ফেসবুক বা মোবাইল ফোনে অর্ডার নিয়ে পণ্য পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে ভোক্তার কাছে।

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মানসনদে বাধ্যতামূলক ২২৭ খাদ্যপণ্য রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে মধু, তেল ও ঘি। আইন অনুযায়ী, এসব পণ্যের ব্যবসা করতে বাজারজাতের আগে বিএসটিআইয়ের ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মান নিশ্চিত করতে হবে। তবে ব্যক্তিনির্ভর অনলাইন শপের কোনো পণ্যের এ সনদ নেয়ার নজির নেই।

অনলাইনে খাদ্যপণ্য কেনার ক্ষেত্রে ভোক্তার প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা স্বীকার করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা।

জানা গেছে, যেকোনো পণ্য অনলাইনে বিক্রি হতে পারে। তবে যেসব পণ্য বিএসটিআইয়ের মান সনদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত, সেই পণ্য দোকান বা অনলাইন যেখানেই বিক্রি করা হোক, বিএসটিআইয়ের সার্টিফায়েড হতে হবে। তা না হলে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

অনলাইন ব্যবসা নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনার জন্য নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

অনলাইনে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় থেকে প্রায় সব পণ্যের ব্যবসা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির।

এখন গতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে হলে যত দ্রুত সম্ভব একটা ই-কমার্স বিপণন নীতিমালা হওয়া দরকার। এটি ভোক্তার অধিকার নিশ্চিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button