তাইজুল ইসলামের বলটা মাঠের বাইরে পাঠিয়ে ১৯৮ রানে পৌঁছে গেছেন কাইল মায়ার্স। জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন কমিয়ে এনেছেন ১৫ রানে। ৩৯৫ রানের বিশাল পাহাড় টপকাতে সফরকারীদের তাই স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
কাইল মায়ার্সের ডাবল সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বেঁধে দেওয়া বিরাট লক্ষ্যও অনায়াসে পার হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চতুর্থ দিন শেষে যেখানে জয়ের পথে ছিল বাংলাদেশ, সেখান থেকে সব কিছু উল্টে জয় পেয়েছে সফরকারীরা।
কাইল মায়ার্সের অপরাজিত ২১০ রানের ইনিংসে করে ৩৯৫ রান তাড়া করে তিন উইকেটের জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেটি এশিয়ায় সর্বোচ্চ ও ক্রিকেট ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তাড়া।
অথচ সিরিজের আগে সবার কাছে বাংলাদেশ ফেভারিট। এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কোচ-অধিনায়কও সে সুরে কথা বলেছিলেন। তৃতীয় দিন শেষে তাইজুল ইসলাম তো বলেই বসলেন, ২৫০ রানই যথেষ্ট জয়ের জন্য।
বাংলাদেশ ক্যারিবীয়দের সামনে লক্ষ্য দিল তার চেয়ে প্রায় দেড়শ রান বেশি, ৩৯৫। প্রথম ইনিংসে মেহেদি হাসান মিরাজের সেঞ্চুরিতে ৪৩০, এরপর মিরাজের চার উইকেটে ১৭১ রানের লিড। দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক মুমিনুল হকের দশম সেঞ্চুরিতে লিডটা ৩৯৪ হলো, অধিনায়ক বললেন যথেষ্ট হয়েছে।
চতুর্থ দিনের বাকি সময়টুকুতে মিরাজ নিয়ে নিলেন আরও তিন উইকেট। এরপরও বাংলাদেশের হারবে, এমন চিন্তা কারও মাথাতেই ছিল না।
পরের দিন যে অভিষেকে কাইল মায়ার্স মহাকাব্য রচনা করবেন, কে ভেবেছিল! অভিষেক টেস্ট, ওয়ানডে সিরিজেও ওরকম রান পাননি। তিনিই বাংলাদেশের সামনে হয়ে দাঁড়ালেন মহাপ্রাচীর। সারা দিনে তাকে আউট করতে পারলেন না তাইজুল-মিরাজরা।
বাংলাদেশ ভুল করেছে দিনজুড়ে। নিশ্চিত আউট ছিলেন মায়ার্স ও বোনার, রিভিউ নেয়নি তারা। মায়ার্সের ক্যাচ ফেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু বাস্তবে এসব নিয়ে কথা বললে সেটি হবে মায়ার্সের ইনিংসকে ছোট করা।
পরিসংখ্যান মিথ্যে বলে, কিন্তু অনন্যকেও প্রকাশ করে। এর আগে অভিষেক টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন আরও পাঁচ ক্রিকেটার। টিপ ফস্টার, লরেন্স রো, ব্রেন্ডন কুরুপ্পু, ম্যাথু সিনক্লেয়ার ও জ্যাক রুডলফ। মায়ার্স ষষ্ঠ।
মায়ার্স এ তালিকার বাকিদের চেয়ে আলাদা। কারণ বাকি পাঁচ জন রান করেছেন প্রথম ইনিংসে। মায়ার্স করেছেন চতুর্থ ইনিংসে। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে।
ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাতে আর কী চাই! অভিষেক টেস্টেই তাই ইতিহাসের পাতায় মায়ার্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এনে দিয়েছেন এক অবিশ্বাস্য জয়।