প্রধান প্রতিবেদন

আলোচনাতেই ফিরবে রোহিঙ্গারা, আশা প্রধানমন্ত্রীর

সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আলোচনার মাধ্যমেই মিয়ানমার ফিরিয়ে নেবে বলে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল মন্ত্রটাই হচ্ছে, ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথেই বৈরিতা নয়।’ এ নীতিমালা জাতির পিতা আমাদের দিয়ে গেছেন। আর এ নীতিমালা অনুসরণ করেই আমরা আন্তরাষ্ট্রীয় সুসম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছি।

আরো বলেন, ‘আজকে কেউই বলতে পারবে না বাংলাদেশের সাথে কোনো দেশের বৈরি সম্পর্ক আছে। আমরা মোটামুটি সবার সাথেই একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে চলছি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ঐক্য উন্নয়ন নিয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত তাৎপর্যময় ও গৌরবময় ভূমিকা রাখছে। অভ্যন্তরীণ সম্পদসহ নানা সীমাবদ্ধতার পরেও আমরা বিপন্ন মানবতার ডাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।’

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে থেকে ছিল আরও প্রায় চার লাখ। বর্তমানে ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে কক্সবাজারের ৩৪টি ক্যাম্পে।

রোহিঙ্গাদের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সরকার। গত ডিসেম্বরে শুরু হয় স্থানান্তর প্রক্রিয়া। ৪ ও ২৯ ডিসেম্বর দুই দফায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুকে ভাসানচরে নেয়া হয়। তৃতীয় দফায় শুক্রবার পাঠানো হচ্ছে আরও ৩০ পরিবারের প্রায় ১৫০ রোহিঙ্গাকে।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকরা যেন নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে এ জন্য আমরা কারও সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্বে লিপ্ত হইনি। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি যে, তারা যেন তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়। একটা বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তবে যারা অন্যায় করছেন, নিশ্চয়ই আমরা সেটা বলব। কিন্তু তারপরেও তারা তাদের নাগরিকদের ফেরত নেবে, এটাই আমরা চাই। আমরা যে এতগুলো বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দিয়েছি, এ জন্য সারা বিশ্ব বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে, সাধুবাদ জানাচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মোট ২২৫ প্রশিক্ষণার্থীকে শিক্ষা সনদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদের মধ্যে ১৮২ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য। আর ৪৩ জন ১৬টি দেশের সশস্ত্র বাহিনী থেকে প্রশিক্ষণে অংশ নেন।

এ নিয়ে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিলেন এক হাজার ২০৮ বিদেশি নাগরিক।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতার প্রণয়ন করা নীতিমালার আলোকে সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button