আল-জাজিরায় প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ তথ্যচিত্রটি দেশ-বিদেশে ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটারসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অপসারণে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিট নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেওয়া হয়।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
১ ফেব্রুয়ারি রাতে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র আল-জাজিরায় প্রচারিত হয়। সেটি বিভ্রান্তিকর, বিদ্বেষমূলক ও মানহানিকর উল্লেখ করে দেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার ও ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এনামুল কবির ৮ ফেব্রুয়ারি রিটটি করেন। রিটে বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ আটজনকে বিবাদী করা হয়।
১০ ফেব্রুয়ারি আদালত রিটের গ্রহণযোগ্যতাসহ কয়েকটি বিষয়ে মতামত দিতে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি ব্যাখ্যাদানকারী) হিসেবে ছয় আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন।
গত সোমবার শুনানির ধার্য তারিখে তাঁরা মতামত তুলে ধরেন।
সোমবার ছয় অ্যামিকাস কিউরির অভিমত শোনার পর আদালত আজ পরবর্তী শুনানির দিন রাখেন। সে অনুসারে আজ সকালে শুনানির পর বিকেলে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে গত সোমবার হাইকোর্টের একই বেঞ্চে মত দেন পাঁচ অ্যামিকাস কিউরি। তারা হলেন এ জে মোহাম্মদ আলী, ফিদা এম কামাল, কামাল উল আলম, প্রবীর নিয়োগী ও শাহদীন মালিক।
আজকের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, রিট আবেদনকারীর মামলা করার অধিকার আছে। দেশের সীমানায় কনটেন্ট আটকানোর কর্তৃত্ব বিটিআরসির রয়েছে।
বিটিআরসির তরফ থেকে ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটারসহ অন্য মাধ্যমের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগযোগ করা হচ্ছে। আদালতের আদেশ হলে বিষয়টি সহজ হয়।
শুনানিতে অংশ নিয়ে বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেলে দ্রুত ওই ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ব্লক বা অপসারণ করা যাবে। ভিডিওটি দ্রুত অপসারণ করা উচিত।
আল-জাজিরায় ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে প্রচারিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
সর্বশেষ সোমবার রাতে আইএসপিআর আবার প্রতিবাদ জানায়।
আজ বুধবার ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন প্রচারের ঘটনায় চার জনের নামে মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আসামিরা হলেন আল জাজিরার অনুসন্ধানী দলের সদস্য ও হুইসেল ব্লোয়ার হিসেবে পরিচিত সায়ের জুলকারনাইন সামি, নেত্র নিউজের এডিটর-ইন-চিফ তাসনিম খলিল, সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান ও আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোস্তেফা সওয়াগ।