
ঢাকার পুরনো স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম আহসান মঞ্জিল। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঢাকার শত বছরের ইতিহাস। পুরান ঢাকার ইসলামপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এ মঞ্জিল।
আহসান মঞ্জিল একসময় ছিল ঢাকার নবাবদের প্রাসাদ। বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মঞ্জিলের প্রতিষ্ঠাতা নওয়াব আবদুল গণি। তার ছেলে খাজা আহসানুল্লাহর নামানুসারে এর নামকরণ করেন তিনি।
অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে আহসান মঞ্জিলের এ জায়গায় একটি রংমহল ছিল, যা নির্মাণ করেন তখনকার জমিদার শেখ এনায়েতউল্লাহ। তার ছেলে মহলটি ফরাসি বণিকের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে খাজা আলিমুল্লাহ ফরাসিদের কাছ থেকে আবার এটি কিনে নেন। তার ছেলে নওয়াব আবদুল গণি ১৮৫৯ সালে এখানে আহসান মঞ্জিলের নির্মাণ শুরু করেন। কাজটি শেষ হয় ১৮৭২ সালে। ১৮৯৭ সালের এক টর্নেডোয় ভবনটির অনেক ক্ষতি হলে নবাব আহসানুল্লাহ তা সংস্কার করেন। জমিদারি উচ্ছেদ আইনে ১৯৫২ সালে ঢাকার নবাব এস্টেট তৎকালীন সরকার অধিগ্রহণ করে। নবাব পরিবারের সম্পত্তির মধ্যে অধিগ্রহণ বহির্ভূত ছিল আহসান মঞ্জিল ও সংলগ্ন আঙিনা।
স্বাধীনতার পর নবাব পরিবারের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা বিদেশে পাড়ি জমান। এ দেশে যারা ছিলেন তারা বিরাট এ প্রাসাদ ভবনের রক্ষণাবেক্ষণে সক্ষম ছিলেন না। ফলে এটি ক্রমাগত ধ্বংস হতে থাকে। ১৯৭৪ সালে নবাব পরিবারের উত্তরসূরিরা আহসান মঞ্জিল নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনটির রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবন করেন। ১৯৭৪ সালের ২ নভেম্বর প্রাসাদ ভবনটি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন তিনি। এরপর সংস্কার করে এখানে জাদুঘর ও পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের নির্দেশ দেন তিনি। ১৯৮৫ সালের ৩ নভেম্বর আহসান মঞ্জিল প্রাসাদ ও তৎসংলগ্ন চত্বর সরকার অধিগ্রহণ করে সেখানে জাদুঘর স্থাপনের কাজ শুরু করে। ১৯৯২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।