অর্থনীতি

এনডিবির সদস্যপদ পাচ্ছে বাংলাদেশ

বিকাশমান অর্থনীতির দেশগুলোর নেতৃত্বে গঠিত ব্রিকস জোটের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) সদস্যপদ পাচ্ছে বাংলাদেশ।

ব্যাংকটির প্রেসিডেন্ট মার্কোস প্রাদো ট্রয়জোর সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশকে সদস্য করার প্রস্তাব সক্রিয়ভাবে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন ব্যাংকটির প্রেসিডেন্ট।

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্বে গঠিত ব্রিকস জোট এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে। ব্যাংকটির মোট মূলধন ১০০ বিলিয়ন ডলার, যার অর্ধেক প্রাথমিক মূলধন নিয়ে ব্যাংকটি ২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা করে।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে। ব্যাংকটি এখন বাংলাদেশসহ ১৫ দেশকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্তির বিষয় বিবেচনা করছে।

এনডিবির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সদস্য হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরণের শর্ত পূরণের সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে। তাই আশা করছি, অচিরে বাংলাদেশ ব্যাংকটির সদস্যপদ অর্জন করতে পারবে।

অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর সহজ শর্তে বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার সুযোগ কমে যাবে। তা ছাড়া ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), ভিশন-২০৪১, ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন ও কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এনডিবি বাংলাদেশের জন্য অর্থায়নের নতুন উৎস হতে পারে।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুসারে, বাহ্যিক ঋণ গ্রহণের জন্য বার্ষিক গড়ে ১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য প্রতি বছর গড়ে ৯.৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হারে আরো একটি অতিরিক্ত প্রাক্কলন প্রয়োজন।

২০৩০ সালের মধ্যে ডেল্টা সম্পর্কিত হস্তক্ষেপ ও প্রকল্পগুলোয় মোট ব্যয় প্রয়োজন বার্ষিক জিডিপির ২ দশমিক ৫% । বিশ্বব্যাংকের তৈরি বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান ২১০০ বিনিয়োগ প্রকল্পে ৮০ প্রকল্প রয়েছে। এর বিনিয়োগ ব্যয় ২০৩০ সাল পর্যন্ত ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এ পরিসংখ্যান দেখায় যে, এখানে বিশাল অর্থনৈতিক ব্যবধান রয়েছে। এই সমস্ত আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবং এ উন্নয়নের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য, বাংলাদেশের একটি নতুন অর্থায়ন প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের জন্য এনডিবি একটি ভাল অর্থায়নের বিকল্প হতে পারে।

বর্তমানে এনডিবির ঋণ দেওয়ার হার নমনীয় ও কম ব্যয়বহুল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

২০১৬ সালে ব্যাংকটি ব্রিকস সদস্যভুক্ত দেশগুলোয় অবকাঠামোগত ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পগুলোয় প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বিতরণ করেছে। ২০১৮ সালে, ব্যাংকটি মোট ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে ১৭ প্রকল্প অনুমোদন করেছে। ২০১৯ সালে গত বছরের তুলনায় ৫৩ শতাংশ বেড়ে ৭ দশমিক ২ বিলিয়নে অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ এ। সম্মিলিতভাবে এনডিবি ৭২ প্রকল্পকে অনুমোদন দিয়েছে, যার মোট মূল্য ২৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button