এবার দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জা।
আজ বুধবার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত কর্মী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি নির্বাচনের পর জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করব। যদি করোনার কারণে দেখা করতে না পারি, তাহলে ঢাকা প্রেসক্লাবে গিয়ে বলব, আমি আপনাদের পরিবর্তন চাই না। আমি পরিবর্তন চাই অপরাজনীতির। চাকরি-বাকরি থেকে, টেন্ডারবাজি থেকে টাকা নেওয়া বন্ধ করতে হবে।’
আবদুল কাদের মির্জা দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে লাঠি তৈরি করছেন কি না জানতে চেয়ে বলেন, ‘ভোট চুরি করার জন্য, ভোটে অনিয়ম করার জন্য কেউ এলে লাঠি দিয়ে পায়ের তলায় পিটাবেন। নারীরা জুতা পুরোনোটা নিয়ে যাবেন। নতুন জুতা দিয়ে পেটালে অপমান কম হবে। যত বড় নেতাই হোক, ভোটকেন্দ্রে রাস্তায় বাধা দিলে ছাড় দেবেন না।’
তিনি নেতা-কর্মীদের বলেন, ‘নিজেরা নিজেদের ভোট দিয়ে কেন্দ্রে লাফালাফি করবেন না, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে আনবেন।’
আরো বলেন, ‘আগে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, আমারটা চলছে। এখন কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র চলছে, তাদের হারানোর জন্য। দুই দিন আগে বিএনপির এক কাউন্সিলর প্রার্থী মাইজদীর এক নেতার সঙ্গে দেখা করেছে। আওয়ামী লীগের তথাকথিত এক নেতা বিএনপির এক নেতার মাধ্যমে দলের (বিএনপির) মেয়র প্রার্থী কামাল চৌধুরীকে ৫০ লাখ টাকা দিছে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীদের হারানোর জন্য। আমার ভোট প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য।’
অভিযোগ করে বলেন, ‘মারামারি করে ভোটটা প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমি বলি সুষ্ঠু ভোট হোক। তারা চেষ্টা করছে মারামারি বাধানোর জন্য। সব চেষ্টা হচ্ছে আমাকে হারানোর জন্য। এখন দেখে হারানো যাবে না। এখন গন্ডগোল বাধিয়ে কামাল চৌধুরী (বিএনপি প্রার্থী) হয়তো ১২টার সময় বলবে, নির্বাচনে কারচুপি হচ্ছে আমি চলে যাচ্ছি। তাদের তো অভ্যাসই এটা, কারণ সিলেটে ১২টার সময় বিএনপির প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। আর রাতে দেখা গেল তিনি জয়লাভ করেছেন। এটা তাদের অভ্যাস।’
আত্মসমালোচনা করে বলেন, ‘আমিও জীবনে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি করেছি। ছোটবেলায় অনেক কিছু করেছি। এটা আর চলতে দেওয়া যায় না। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন এ জন্য? এ দেশের মানুষের ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি এই দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। জননেত্রী শেখ হাসিনা আজকে মানুষের ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন, কিন্তু আজও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এটা একমাত্র করতে পারেন শেখ হাসিনা।’
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘অপরাজনীতি বন্ধ করে দলকে সংশোধন না করলে আগামী নির্বাচনে আমাদের বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে, এ জন্য আমি কথাগুলো বলছি। এই নির্বাচন এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আজকে আমাদের কোনো কোনো নেতা আমার বিরুদ্ধে সমালোচনা করে। আমি যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে কথা বলি, ছেলেমেয়েদের চাকরির কথা বলি, গ্যাসের কথা বলি—এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, যখন গরিব পুলিশের, প্রাইমারি স্কুলের চাকরি দিয়ে টাকা নেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, তখন আমি উন্মাদ, পাগল। সত্য কথা বলা যাবে না।’
সেতুমন্ত্রীর ভাই বলেন, ‘আজকে কথাগুলো বলছি, আমি জানি আমার নেত্রী আমার কথাগুলো সমর্থন করেন। আমার নেত্রীর কাছে কোনো চাওয়ার নাই। সাহস করে সত্য কথা বললে নেত্রী পছন্দ করেন। শেখ হাসিনার কারণে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। নোয়াখালীর মানুষ কী কয়? শেখ হাসিনা একা, কী করবেন? তাহলে শেখ হাসিনার নিজের কারণে দলের জনপ্রিয়তা বেড়েছে; না একরাম চৌধুরী, নিজাম হাজারীর কারণে জনপ্রিয়তা বেড়েছে? শেখ হাসিনার কারণে জনপ্রিয়তা বেড়েছে।’