বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ভাইরাসটির উৎসস্থল হিসেবে তকমা পেয়ে আসছে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর। তবে এই তকমা গায়ে লাগাতে রাজি নয় চীনা সরকার।
যদিও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়, করোনা কোথা থেকে সংক্রমণ শুরু হয়েছে। আর তাই, করোনার উৎস কোথায়, তা জানতে এবার উহান শহরে তদন্ত চালাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ১০ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত তদন্ত দলটির এ মাসে চীনে যাওয়ার কথা রয়েছে।
ওই বিশেষজ্ঞ দলের এক সদস্য সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছে, উৎস নিয়ে কাউকে দোষ দিতে চাচ্ছে না ডব্লিউএইচও, বরং ভবিষ্যতে করোনার সংক্রমণ মোকাবিলা করতে চাচ্ছে।
তদন্তদলের সদস্য জার্মানির রবার্ট কোচ ইনস্টিটিউটের ফ্যাবিয়ান লিন্ডার্টজ বলেছেন, করোনার উৎসের জন্য কোন দেশ দায়ী, তা খুঁজতে এই তদন্ত করা হচ্ছে না। মূলত কী ঘটেছিল, তা জানার পর পাওয়া তথ্য-উপাত্ত নিয়ে ভবিষ্যতে আমরা ঝুঁকি কমাতে পারি।
চার থেকে পাঁচ সপ্তাহ ধরে এই তদন্তের কাজ চলতে পারে বলে জানিয়েছেন ফ্যাবিয়ান।
তদন্ত চালাতে বেশ আগে থেকেই অনুমতি চেয়ে এসেছে ডব্লিউএইচও। তবে এতদিন গড়িমসি করার পর এবার মধ্যস্থতায় পৌঁছাল বেইজিং।
শুরু থেকেই অনেকে ধারণা করছে, উহান শহরের একটি পশু বিক্রির বাজার থেকে করোনা ছড়িয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে কয়েকবার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন অভিযোগ করেছিল, করোনার উৎস সম্পর্কে তথ্য গোপন করছে চীন। উহানের একটি জৈব পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে। চীন সে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এ ছাড়া উহানের একটি বাজারে প্যাঙ্গোলিন বা বাদুড় থেকে ভাইরাসটি ছড়ানোর অভিযোগও অস্বীকার করেছে দেশটি।
চীন নতুন দাবি নিয়ে হাজির হয়েছে। তারা বলছে, গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল। তারাই প্রথম এ সম্পর্কে সবাইকে জানিয়েছে ও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নতুন ধরনের ভাইরাস। এর তথ্য জানার পর থেকেই আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। আমরা সবাই জানি, ২০১৯ সালের শেষ দিকে বিভিন্ন দেশে মহামারিটি শুরু হয়। চীন প্রথম এ সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই ভাইরাসটি শনাক্ত করে বিশ্বের সবার কাছে জিনোম সিকোয়েন্স জানানো হয়।’
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে চীনে করোনার উৎস খুঁজতে যে বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হবে, তার তালিকা দেওয়া হয়েছে।