সমকালীন ভাষ্য

জমানো টাকায় শিশুদের অমর একুশে উদযাপন

গ্রামে নেই কোনো শহীদ মিনার। কিন্তু থেমে থাকেনি ভাষা শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজন।

শিশুরাই স্থানীয়দের বাড়ি থেকে সংগ্রহ করে কলাগাছ। নিজেদের জমানো টাকায় কেনে রঙিন কাগজ, সুতা ও আঠা। খবরের কাগজ মোড়ানো কলাগাছগুলো পোঁতা হয় শহীদ মিনারের আদলে। সুতায় রঙিন কাগজের টুকরো ঝুলিয়ে সাজানো হয় মিনারের চারপাশ।

একুশের প্রথম প্রহরে এখানেই ভাষা শহিদদের প্রতি নিবেদন করা হয় শ্রদ্ধা। দৃশ্যটি গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়নের আক্তাপাড়া গ্রামে। এ বছরই প্রথম নয়। অতীতেও শহিদদের স্মরণে ছিল এমন আয়োজন।

এবার গ্রামের ১৭ শিশু তাদের জমানো টাকা ও অভিভাবকদের দেয়া চাঁদায় স্থানীয় সোনা মিয়ার জমিতে শহীদ মিনার তৈরি করেছে। ২০ ফেব্রুয়ারিই তারা শেষ করেছে শহীদ মিনার তৈরির কাজ। সোনা মিয়ার জমিতে যাতে শিশুরা প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করতে পারে তাই তিনি এ সময় জমিতে কোনো চাষাবাদ করেন না বলে জানিয়েছেন।

স্থানীয় রেইনবো কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থী নয়ন মাহমুদ জানায়, তাদের গ্রামে কোনো শহীদ মিনার নাই। কিন্তু তারাও ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে চায়। তাই শহীদ মিনার বানানো হয়েছে।

শিশুদের এ আয়োজনে সামিল হন বড়রাও। তারাও আসেন, সাহায্য করেন নানাভাবে।

সোনা মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন শিশুরা এভাবে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছে। বাংলা ভাষা ও ভাষার জন্য জীবন দেয়া শহিদের প্রতি তাদের ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ।

আরও জানান, গ্রাম থেকে দুই কিলোমিটার দূরে একটি শহিদ মিনার আছে। আগে গ্রামের ছেলেমেয়েরা সেখানেই ফুল দিতে যেত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে তারা নিজেরাই অস্থায়ী মিনার তৈরি করে। এখন আর তাদের দূরে যেতে হয় না।

শ্রীপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সাঈদ চৌধুরী বলেন, শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যত। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, শহিদ দিবস সম্পর্কে এখন থেকেই তাদের জানাতে হবে। জাতির জন্য এটা খুব দরকার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button