স্বাস্থ্য

টিকা নিবন্ধনের বয়সসীমা আরও কমছে

ধাপে ধাপে তরুণ জনগোষ্ঠীকেও করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার আওতায় আনতে টিকা নিতে আগ্রহীদের বয়সসীমা আরও কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আজ সোমবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম।

‘করোনা টিকা নেয়ার বয়সসীমা ৪০ বছরের চেয়েও কমে আসছে। টিকা নিতে নিবন্ধন জটিলতা লাঘবে চেষ্টা করা হচ্ছে। নিবন্ধন করতে এখন যে সব কোটা পদ্ধতি রয়েছে সেটা তুলে দেয়া হবে।’

করোনা টিকা নিতে আগ্রহীদের বয়স এরই মধ্যে একবার পরিবর্তন করেছে সরকার। শুরুতে বলা হয়েছিল, টিকা নিতে হলে বয়স হতে হবে অন্তত ৫৫ বছর। ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকা প্রয়োগ শুরুর পরের দিন গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বয়স কমিয়ে ৪০ করা হয়। তরুণদেরও টিকার আওতায় আনতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সরকার থেকে জানানো হয়।

বিশ্বজুড়ে নানা টিকার প্রয়োগ চলছে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার, মডার্না, রাশিয়ার স্পুৎনিক ও চীনের সিনোভ্যাক। বাংলাদেশে চলছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত ‘কোভিশিল্ড’ টিকা।

এ টিকার তিন কোটি ডোজ পেতে সিরাম ও ভারত সরকারের সঙ্গে আগে চুক্তি করে রাখে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সরকার থেকে টিকা আনা ও সরবরাহের দায়িত্ব দেয়া হয় বেক্সিমকো ফার্মাকে। আগাম তৎপরতার কারণে অনেক দেশের তুলনায় আগেভাগে টিকা পায় বাংলাদেশ।

চুক্তি অনুযায়ী কেনা টিকার ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালান দেশে পৌঁছায় গত ২৫ জানুয়ারি। এর চার দিন আগে এই টিকার ২০ লাখ ডোজ বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে পাঠায় ভারত সরকার। এই ৭০ লাখ ডোজ হাতে নিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি কয়েকজনকে প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে পরীক্ষামূলক টিকাকরণ শুরু হয়।

গতকাল রোববার পর্যন্ত গণটিকা দেয়া শুরুর ছয় দিনে টিকা নিয়েছেন ৯ লাখ ৬ হাজার ৩৩ জন। এর আগে পরীক্ষামূলক টিকা নেন ৫৬৭ জন।

সব মিলিয়ে এখনও সরকারের হাতে আছে প্রায় ৬০ লাখ ডোজ টিকা। হাতে পর্যাপ্তসংখ্যক টিকা থাকলেও ২২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় চালানের টিকা দেশে পৌঁছাচ্ছে বলে জানালেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সচিব খুরশীদ আলম।

তবে প্রথম ধাপের তুলনায় এই ধাপে টিকার পরিমাণ কম থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি টিকার দ্বিতীয় চালান দেশে আসছে। ৫০ লাখ টিকা আসার কথা থাকলেও একটু কম আসবে। উৎপাদন চাহিদা অনুযায়ী মিলাতে পারছে না উৎপাদনকারী। কম আসার জন্য আমাদের কোনো সংকট দেখা দেবে না। আগামী মাসে কোভেক্সের ৫০ লাখ টিকা দেশে আসবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাকরণ পরিকল্পনায় ফের পরিবর্তন আনা হয়েছে। টিকা দান কার্যক্রমের শুরু থেকে আট সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার কথা বলা হলেও পরে আবার সেটাকে চার সপ্তাহে নামিয়ে আনা হয়। পরে এটা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের আলোচনা সমালোচনার মুখে সেটাকে আবারও আট সপ্তাহ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় কমিটিসহ অনেকের সঙ্গে এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন থেকেও দ্বিতীয় ডোজের ব্যাপারে ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের পরামর্শ আছে। সেক্ষেত্রে আমরা আট সপ্তাহকেই বেছে নিচ্ছি।’

অনেককে দ্বিতীয় ডোজ নিতে চার সপ্তাহ পর সময় দেয়া হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, তাদের দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার তারিখ পরিবর্তন করে দেয়া হবে।

খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমাদের কাছে টিকা গ্রহীতাদের যে তথ্য আছে, সে আলোকে আবারও সময় ঠিক করে মেসেজে দ্বিতীয় ডোজের ব্যাপারে জানিয়ে দেয়া হবে। যেহেতু আট সপ্তাহের একটা বড় সময় আছে, এর মধ্যে আমরা ঠিক করে ফেলতে পারবো বলে আশা করছি।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button