স্বাস্থ্য

টিকা নিয়েছে এক শতাংশের বেশি মানুষ

মহামারী প্রতিরোধে সারাদেশে চলছে টিকাকরণ। ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশে টিকা নিয়েছেন ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৩ জন, যা এক শতাংশের কিছুটা বেশি।

শুরুর দিকে টিকা নেওয়ায় মানুষের আগ্রহ কম থাকলেও, অনেক কেন্দ্রে এখন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দেড়গুণ পর্যন্ত বেশি মানুষ টিকা নিতে ভিড় করছেন বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।

আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) আয়োজিত ‘করোনা সংক্রমণের গতিবিধি ও টিকা’ শীর্ষক এক সংলাপে আইইডিসিআর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর এ তথ্য জানিয়েছেন। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মিলনায়তনে সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।

এ এস এম আলমগীর বলেন, করোনা প্রতিরোধে অনেক দেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৫টির বেশি দেশ মোট জনসংখ্যার এক শতাংশের বেশি জনগণকে টিকার আওতায় আনতে পেরেছে।

যুক্তরাজ্য ২৩ শতাংশ পূরণ করেছে। আবার আমাদের আগে টিকা কার্যক্রম শুরু করার পরেও জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় ভারত ওই টার্গেটে যেতে পারেনি।

এর আগে সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভ্যাক্স থেকে মোট জনগোষ্ঠীর ২০ শতাংশকে টিকা সরবরাহ করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিলো। তবে এটি বেড়ে ২৭ শতাংশ হতে পারে বলে জানা গেছে। দেশে এখন ক্লাস্টারভিত্তিক সংক্রমণ চলছে কি-না তা এ সপ্তাহের মধ্যে জানা যাবে।

তিনি বলেন, দেশে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের কম। আমরা স্বস্তির একটি পরিবেশে আছি। তার মানে এই নয় যে সংক্রমণ কমে গেছে। অনেক দেশে সংক্রমণের হার কমার পরে পুনরায় তা বেড়েছে। তাই আমাদের অবহেলা করলে চলবে না। টিকা নেওয়ার পাশাপাশি মাস্ক পড়া, ঘনঘন সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া, জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার মতো স্বাস্থ্যবিধিগুলো আমাদের মানতে হবে। মনে রাখতে হবে টিকা মৃত্যু কমাবে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা একটি অন্যতম পন্থা, তবে একমাত্র নয়।

এ সময় ইউজিসি অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, সংক্রমণ কমে এসেছে তা স্বস্তির খবর। কিন্তু আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নাই। মৃত্যুর মিছিল উঠা-নামা করছে। এখন অনেকেই আমাদের দেশে আসবে। ভাইরাসটি যাতে আমদানি হয়ে না আসে, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। টিকা দেওয়ার পাশাপাশি মাস্কও পড়তে হবে। দুটি মাস্ক পড়লে তা আরও বেশি কার্যকর হবে- বলা হচ্ছে।

একুশে পদকপ্রাপ্ত অণুজীব বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর আগেই আমাদের সিকোয়েন্সিংয়ের মেশিন ছিলো। কিন্তু এ কাজে আমরা সফলতা দেখাতে পারিনি। তবে করোনাকালে সবাই মিলে যখন কাজটি শুরু করি তখন বড় একটি কাজ হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ডা. আবু জামিল ফয়সাল, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) সভাপতি ও করোনা প্রতিরোধে জাতীয় কারিগরি পরামর্শ কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সালান, বিএইচআরএফের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রাব্বি প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button