সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারের কেনা ও ভারতের পাঠানো উপহারের টিকা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা হাতে পেয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৬৫৬ জনকে। এদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজও পেয়েছেন ২৮ লাখ ৫ হাজার ৬৯৪ জন। আর দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৯৬২ জন।
ইতোমধ্যে সব মিলিয়ে ৮৬ লাখ ২৫ হাজার ৩০৫ জনকে টিকা দেওয়া হয়ে গেছে। এখন অধিদপ্তরের হাতে টিকা মজুদ আছে ১৫ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯৫ ডোজ। সে হিসাবে স্বাস্থ্য দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে পারবে ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ৩৮৯ জন। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে টিকা না এলে যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাদের মধ্যে ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ২৬৭ জনের দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দেবে।
অধিদপ্তরে জানায়, এখন যে টিকা মজুদ আছে তা দিয়ে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের টিকা কার্যক্রম চালানো যাবে। এর মধ্যে নতুন চালান না এলে টিকাদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে।
এর আগে ২৫ এপ্রিল (রোররার) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএইচ শাখার লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, মজুদ কমে আসায় এবং সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা না কাটা ২৬ এপ্রিল (সোমবার) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমের প্রথম ডোজের টিকা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে।
তবে প্রথম ডোজের টিকা আবার কবে দেওয়া শুরু হবে সেটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তররের কেউ সঠিক বলতে পারেননি। অনেকেই ধারণা করছেন, টিকার নতুন চালানে পর্যাপ্ত টিকা এলে এমনকী দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়ার মতো টিকা হাতে রেখেই আবারও প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া শুরু হবে।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের করোনার টিকা অনেকে প্রথম ডোজ নিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার কারণে অনেকে এ টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাবেন না- এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের মিটিং হয়েছে। মিটিং থেকে আমরা একটা কমিটি করেছি। সেই কমিটি পর্যালোচনা করবে। দ্বিতীয় ডোজে রাশিয়ার স্পুতনিক বা চীনের সিনোফার্মের টিকা দেওয়া যায় কিনা সেটি আমাদের বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করবেন।
করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে স্পুতনিক বা সিনোফার্মের টিকা দেওয়া যেতে পারে বলেও জানান তিনি।
অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন বলেন, কোনো কোনো আর্টিকেলে বলা আছে, এটা হয়তো দেওয়া যাবে। যদিও বিশেষজ্ঞ মতামত ছাড়া এটা বলা ঠিক না, তবুও আশা করছি এটা সম্ভব।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের তথ্য অনুসারে, গত ২৭ জানুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে। প্রথম দিন টিকা দেওয়া হয় ২৬ জনকে। আর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয় ৮ এপ্রিল থেকে। ২৬ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া বন্ধ ঘোষণা করলেও কিছু কিছু কেন্দ্রে দেওয়া হচ্ছে।