আন্তর্জাতিক

নিউজিল্যান্ড মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত করল

সামরিক অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমারের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের সব ধরনের সম্পর্ক সীমিত করার ঘোষণা দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে মিয়ানমার সেনাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আর্থিক অবরোধও আরোপ করতে যাচ্ছে দেশটি।

আজ মঙ্গলবার সংবাদিকদের নিউজিল্যান্ড সরকারের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।

তিনি জানান, মিয়ানমারের জান্তা সরকার লাভবান হয় নিউজিল্যান্ডের অর্থ সহায়তা খাতে এমন কোনো প্রকল্প যাতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে।

২০২০ সালের নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে গত সপ্তাহে অং সান সু চিসহ ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির নেতাদের বন্দি করে মিয়ানমারে সামরিক শাসন জারি করে সেনাবাহিনী।

এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ ও জাতিসংঘসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো। আর সেনাদের রক্তচক্ষুর মুখে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের জনগণ।

মিয়ানমারের অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সবই করবেন জানিয়ে আরডার্ন বলেন, ‘আমাদের জোরালো বার্তা হচ্ছে, নিউজিল্যান্ডে থেকে যা যা করা যায়, আমরা তাই করব। আমরা যেসব উদ্যোগ নেব, তার মধ্যে অন্যতম উচ্চপর্যায়ে বৈঠক স্থগিত করা…সেনাশাসন লাভবান হয়, এমন খাতে অর্থ সহায়তা যাতে না যায়, তা নিশ্চিত করা।’

নিউজিল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৮ ও ২০২১ সালের মধ্যে তার দেশের অর্থ সহায়তার পরিমাণ ছিল প্রায় তিন কোটি ডলার।

মিয়ানমারের সেনা নেতৃত্বাধীন সরকারকে নিউজিল্যান্ড স্বীকৃতি দেবে না বলে পৃথক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী নানাইয়া মাহুতা। অং সান সু চিসহ মিয়ানমারে বন্দি রাজনৈতিক নেতাদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মাহুতা বলেছেন, আসছে সপ্তাহে মিয়ানমারের সেনাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি কার্যকরে সম্মতি দিয়েছে তাদের সরকার।

অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছেন মিয়ানমারের ক্ষমতায় বসা জেনারেল মিন অং হ্লাইং। টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, গত নভেম্বরে নির্বাচন মোটেও সুষ্ঠু ছিল না। নতুন করে নির্বাচন দেবেন তিনি। ক্ষমতা তুলে দেবেন নির্বাচিতদের হাতে।

তবে আন্দোলনকারীদের দেখে নেয়ার সরাসরি কোনো হুমকি দেননি সেনাপ্রধান হ্লাইং। কেবল বলেছেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

এ ছাড়া, জনরোষ নিয়ন্ত্রণে বড় বড় শহরগুলোতে কারফিউ আরোপ করা হয়েছে। পাঁচ জনের বেশি জমায়েত না হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব বিধিনিষেধে পাত্তা দিচ্ছে না মিয়ানমারের জনগণ। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button