আজ সকালে বসানো হলো ৩৩তম স্প্যান। ফলে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতুর প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এখন দৃশ্যমান। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের আর আটটি স্প্যান অর্থাৎ এক দশমিক ২ কিলোমিটারের স্প্যান বসলেই দৃশ্যমান হবে পুরো সেতু।
চলতি মাসে এ নিয়ে দুইটি স্প্যান বসানো হলো। আরও দুইটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এর আগে কখনো এক মাসে পদ্মা সেতুতে চারটি স্প্যান বসেনি।
তবে কাজ শেষ হতে এখনও ঢের বাকি। স্প্যানের উপর সড়ক আর নিচের তলায় রেল লাইন বসিয়ে উদ্বোধন করা হবে যান ও রেল চলাচল।
সেতুটি মোট ৪২ পিলারের উপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে তৈরি করা হবে। সোমবার সকালে বসানো হলো ৩৩ তম স্প্যানটি। ফলে দৃশ্যমান হয়েছে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার।
একাধিক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, আগামী ২৫ ৩০ অক্টোবর আরও দুটি স্প্যান বসানোর প্রস্তুতি চলছে।
করোনাকালে অন্য অনেক প্রকল্পের মতো পদ্মাসেতুর কাজও পিছিয়ে যাচ্ছে। ফলে সময় মতো সেতুটি চালু হচ্ছে না, এটা নিশ্চিতই বলা যায়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও একাধিকবার তা বলেছেন। তবে নতুন সময়সীমা এখনও ঘোষণা হয়নি।
পদ্মাসেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ( মূল সেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, নাব্যতা সঙ্কট, তীব্র স্রোত ও বর্ষায় পানির উচ্চতা বাড়ায় কাজের গতি কিছুটা কমলেও তা পুষিয়ে নিতে বাড়ানো হয়েছে কাজের গতি। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ সবগুলো স্প্যান বসিয়ে দেওয়া হবে।
২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বরে সেতুর মূল নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন ২০১৮ সালের মধ্যে সেতুর নির্মাণ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়। তবে নদীর নিচে মাটির গঠনগত জটিলতায় ১১টি পিলার নির্মাণের কাজে বিলম্ব হয়। জটিলতার অবসান ঘটায় নতুন নকশা। এ কারণে সেতুর কাজ পেছায় দুই বছরেরও বেশি। পরে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের মার্চে করোনার হানায় আবার ধীরগতি তৈরি হয় কাজে। চীনা কর্মীদের একটি বড় অংশ দেশে চলে যাওয়ার কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়।
গত ২৬ আগস্ট অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল জানান, ২০২২ সালে চালু হতে পারে সেতুটি।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৫০ ভাগ ও আর্থিক অগ্রগতি ৮৭ দশমিক ৫৫ ভাগ। নদী শাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৪ দশমিক ৫০ ভাগ।