দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ফোটে ঝাড়ফুল। ভিন্নধর্মী এ ফুল ঘরে সাজিয়ে রাখা হয় না, খোঁপাতেও এর ঠাঁই হয় না। ঝাড়ফুল দিয়ে বানানো হয় ঝাড়ু। সেই ঝাড়ু বাজারে বিক্রি করেন স্থানীয়রা।
মাঘে বান্দরবানের থানচি, রুমা, আলীকদম, রোয়াংছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের যেদিকে চোখ যায়, শুধু ঝাড়ফুলের সমারোহ। ফুল থাকবে চৈত্র পর্যন্ত।
পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে ফোটা এ ফুলের ১০ থেকে ১৫টি দিয়ে আঁটি বেঁধে ঝাড়ু বানানো হয়। সেই ঝাড়ু স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৫ টাকায়।
শুধু স্থানীয় বাজারে নয়, সারা দেশে রয়েছে এ ঝাড়ুর চাহিদা। তাই অনেকে বাড়তি আয়ের উপায় হিসেবে নেন ঝাড়ু বানানোকে।
ঝাড়ফুল সংগ্রহকারী নারী মেনু প্রু মারমা জানান, গত বছর ঝাড়ু বিক্রি করে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। তার আশা, এ বছর ঝাড়ু থেকে আয় হবে প্রায় লাখ টাকা। মেনুর ইচ্ছা বাণিজ্যিকভাবে ঝাড়ফুলের বাগান করার।
ঝাড়ফুল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কিবরিয়া জানান, তিনি ১৭ বছর ধরে পাহাড়ের মানুষের কাছ থেকে পাইকারি দরে ঝাড়ু কেনেন। তারপর ট্রাকে করে চট্টগ্রাম-ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেন।
ঢাকার বাজারে ফুলঝাড়ু বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
কিবরিয়ার অধীনে প্রায় ৯০ নারী-পুরুষ ঝাড়ফুল রোদে শুকানো ও আঁটি বানানোর কাজ করেন। তিনি মনে করেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে পাহাড়ের মানুষের আর্থিক সংকট মেটাতে ফুলঝাড়ু শিল্প সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আরেক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ গফুরের ধারণা, এ বছর বান্দরবান থেকে ৮৫ ট্রাকের বেশি ঝাড়ফুল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে।
বান্দরবান বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক রেজাউল আলম বলেন, ‘যারা ঝাড়ফুল সংগ্রহ করেন, তাদের আমরা নিরুৎসাহিত না করে নিয়ম অনুযায়ী পারমিট দিয়েছি। বাণিজ্যিকভাবে বাগান করতে পারলে এটি লাভজনক পেশা হতে পারে।’
-নিউজবাংলা২৪