জাতীয়

বসুরহাটে পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন, জনমনে আতঙ্ক

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে জারি করা ১৪৪ ধারার সময় পার হয়েছে। তবে এখনো কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসন। নতুন করে যাতে সেখানে কোনো ধরনের সহিংসতার ঘটনা না ঘটতে পারে, সে জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ৩০০ পুলিশ (১০০ জন করে পর্যায়ক্রমে) এবং ১৬ জন র‌্যাব সদস্য। জেলা পুলিশের পাশাপাশি রাঙামাটি থেকে আনা হয়েছে ২০০ জন পুলিশ সদস্য। রয়েছেন পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বসুরহাটের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় অবস্থান নিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।

বসুরহাটে থাকা বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজ সকালে জানান, বসুরহাটের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ সকাল থেকে অবস্থান করছে। পাশাপাশি পুলিশের একাধিক মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছে। টহল দিচ্ছেন র‌্যাবের সদস্যরাও। বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে ১৫-২০ জন অনুসারী নিয়ে সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত। কোথাও কোনো সমস্যা নেই।

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বসুরহাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারার মেয়াদ গতকাল বুধবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নতুন করে ১৪৪ ধারা জারি না করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বসুরহাটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রাখা এবং টহল জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল আটটা থেকে বসুরহাট শহরের পৌরসভার গেট, রূপালী চত্বর, বঙ্গবন্ধু চত্বরসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের একাধিক দল শহরে টহল দিচ্ছে। সকাল ১০টা নাগাদ শহরের কিছু কিছু দোকানপাট খুলেছে। পরিস্থিতি বুঝে হয়তো দোকানপাট খোলার পরিমাণ বাড়বে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

এদিকে ১৪৪ ধারা জারির পর বসুরহাটে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকলেও বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মাঝে এখনো আতঙ্ক কাটছে না। একাধিক ব্যবসায়ী জানান, পুলিশ-র‌্যাব থাকায় তাঁরা দোকান খুলেছেন, কিন্তু অজানা এক ভয় কাজ করছে তাঁদের মাঝে। কখন আবার কী ঘটে! এই ব্যবসায়ীরা জানান, দুই মাসের বেশি সময় ধরে তাঁরা কাদের মির্জার লাগাতার নানা কর্মসূচির কারণে কার্যত জিম্মি হয়ে পড়েছেন। বসুরহাট বাজারে লোকজনের স্বাভাবিক উপস্থিতিও কমে গেছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিকেলে বসুরহাটের রূপালী চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভা চলাকালে সভাস্থলের কয়েকশ গজ দূরে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে সভা আয়োজনকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল ও সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার জের ধরে রাত সাড়ে নয়টায় উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ হয়েছে। ওই সংঘর্ষে মিজানুর রহমানের সমর্থক শ্রমিক লীগের নেতা আলাউদ্দিন (৩২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। যাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button