জাতীয়

বিষাক্ত মদ সরবরাহে ১৩ জন শনাক্ত

বিষাক্ত মদ পান করে সম্প্রতি রাজধানীর ১৩ জনের মৃত্যু ও কয়েকজনের অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় পুলিশ এক নারীসহ ১৩ খুচরা সরবরাহকারীকে শনাক্ত করেছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রায় চার মাস ধরে তাঁরা ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে বিষাক্ত মদ সরবরাহ করে আসছিলেন বলে জানতে পেরেছেন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (গুলশান) কর্মকর্তারা।

গত সপ্তাহে গোয়েন্দা বিভাগের (গুলশান) কর্মকর্তারা রাজধানীর তেজগাঁও ও ভাটারায় অভিযান চালিয়ে মনতোষ চন্দ্র অধিকারী ওরফে আকাশ (৩৫), রেদোয়ান উল্লাহ (৩৫), সাগর ব্যাপারী (২৭), নাসির আহমেদ ওরফে রুহুল (৪৮), জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) ও সৈয়দ আল আমিন (৩০) নামের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার গাজীপুর জেলা পুলিশ গ্রেপ্তার করে জাহিদ মোল্লা নামের আরেকজনকে।

চক্রটির উৎপাদিত মদ নানা ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতেন ১৩ খুচরা সরবরাহকারী। তাঁরাই গাজীপুরে অবকাশ যাপনে যাওয়া দলটিকে রাজধানীর বনানীতে গত ২৮ জানুয়ারি বিষাক্ত মদ পৌঁছে দেন। এর বাইরে বারিধারা ডিওএইচএস, ভাটারা ও মোহাম্মদপুরেও এই সরবরাহকারীদের মাধ্যমেই মদ পৌঁছে দিয়েছিলেন চক্রের লোকজন। ওই এক দিনে তাঁরা ৩৭ বোতল মদ সরবরাহ করেন। ক্রেতাদের কে কেমন আছেন, পুলিশ সে ব্যাপারে খোঁজখবর করছে।

বনানীতে সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীকে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন একটি থলে দিয়ে যান। পুলিশ বলছে, ওই দুজনের একজন ছিলেন রেদোয়ান ও অন্যজন জাহিদ। তা ছাড়া বারিধারা ডিওএইচএসের একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী এই একই চক্রের কাছ থেকে মদ কেনেন। সেই ফুটেজও এখন পুলিশের হাতে।

গত সোমবার পুলিশ যে চক্রটিকে গ্রেপ্তার করে, তাদের হিসাবের খাতায় সরবরাহকারীদের নাম লেখা আছে। তবে নারী সরবরাহকারীর নাম লেখা আছে ‘ম্যাডাম’ হিসেবে। তিনি ধানমন্ডিতে থাকেন। পুলিশের ধারণা, তিনি নিজের বাসা থেকেই মদ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। গত ২৮ জানুয়ারি এই নারীও ছয় বোতল মদ কেনেন।

গ্রেপ্তার চক্রটি মদ বিক্রির সঙ্গে জড়িত প্রায় চার বছর ধরে। তারা মদ বানাতে শুরু করে মাস চারেক আগে। বাজারে সরবরাহ ঘাটতির সুযোগ নেয় তারা। যাঁরা নিয়মিত মদ পান করেন, তাঁরা বিশ্বাস করেই এ সূত্রগুলোর ওপর নির্ভর করেছিলেন ও বিনা দ্বিধায় মদ কেনেন।

মদে চক্রটি ঠিক কী কী উপাদান মিশিয়েছে, জানতে পুলিশ আদালতের কাছে নমুনা পরীক্ষার আবেদন করেছে। অনুমতি পেলে রাসায়নিক পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হবে।

অবকাশ যাপনে যাওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে সংকটে থাকা ব্যক্তির অবস্থার কোনো উন্নতির খবর পাওয়া যায়নি। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যে রোগীকে আইসিইউ থেকে কেবিনে সরানো হয়েছিল, তাঁর চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আরো কয়েক দিন পর চোখের পরিস্থিতি ঠিক কেমন, সে সম্পর্কে বোঝা যাবে বলে জানান ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button