করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী ভারতে। দেশটিতে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। শুক্রবার আগের সব রেকর্ড ভেঙে দেশটিতে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ২ হাজার ১১০ জন। এ দিন করোনায় মারা যায় ৩ হাজার ৫২২ জন।
করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থির মধ্যে রাজ্যের কোথাও অক্সিজেনের ঘাটতি নেই, পর্যাপ্ত শয্যাও রয়েছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অবস্থা নিয়ে ভূরি ভূরি অভিযোগের মধ্যেও এমনটাই দাবি করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, ততই যোগীরাজ্যে স্বাস্থ্যব্যবস্থার করুণ চিত্র আরও স্পষ্ট হয়ে ধরা দিচ্ছে। এদিকে, হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে এবার রাজ্যের নয়ডায় পার্কিং লটে মৃত্যু হল কোভিড আক্রান্ত এক নারীর।
বৃহস্পতিবার গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস-এর পার্কিং লটে এ ঘটনা ঘটেছে। মৃত নারীর নাম জাগৃতি গুপ্ত। মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা জাগৃতি উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুই ছেলেকে নিয়ে তার স্বামী মধ্যপ্রদেশেই ছিলেন। নয়ডায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি।
সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হন জাগৃতি। তিনি যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ির মালিকই তাকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। সেই অবস্থায় তাকে গাড়িতে বসিয়ে হাসপাতালে শয্যার ব্যবস্থা করতে যান ওই ব্যক্তি। কিন্তু ৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ছোটাছুটি করেও শয্যা পাওয়া যায়নি।
দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে রিসেপশন থেকে গাড়িতে জাগৃতিকে দেখতে আসেন ওই ব্যক্তি। সেখানে আসনের উপর জাগৃতিকে লুটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ফের রিসেপশনে ছুটে যান ওই ব্যক্তি। হাসপাতালের কয়েক জন কর্মী তার সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসেন। পরে তারাই জাগৃতিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে উত্তরপ্রদেশের সর্বত্রই একই চিত্র ধরা পড়ছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, শয্যা এবং অক্সিজেনের অভাবে হাসপাতাল থেকে রোগীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন পরিবার পরিজনরা।