
অভ্যন্তরীণ রুটে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকে সুবিধা দিতে নিয়মিত রুটগুলোতে ফ্লাইট চালাচ্ছে না রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তবে অনিয়মিত কয়েকটি রুটে ফ্লাইট চালু থাকবে বলে নিশ্চিত করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
এ ক্ষেত্রে বিমানের যুক্তি, তাদের বহরে থাকা উড়োজাহাজগুলো দীর্ঘ দূরত্বে উড়তে সক্ষম। তাই উড়োজাহাজের পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোকাব্বির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বিমান যদি পুরোপুরি অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট শুরু করে ও বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকে প্রতিযোগিতায় নিয়ে আসে, তাহলে তারা সামনে এগোতে পারবে না।
তবে সিলেট-কক্সবাজার রুটের মতো অপ্রচলিত রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান। যশোর-চট্টগ্রাম রুটেও শুরু হবে ফ্লাইট।
বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ইক্যুইপমেন্টের (উড়োজাহাজ) সঙ্গে বিমানের উড়োজাহাজের পার্থক্য রয়েছে। বিমানের উড়োজাহাজগুলো তুলনামূলক হাইএন্ড। এ কারণে তারা যে উড়োজাহাজগুলো চালায়, সেগুলো আধা ঘণ্টা বা এ রকম দূরত্বের গন্তব্যের জন্য খুব লাভজনক।
সাধারণত অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালাতে ড্যাশ এইট ও এটিআর সেভেনটি টু মডেলের উড়োজাহাজ ব্যবহার করে দেশি এয়ারলাইন্সগুলো। এ দুই ধরনই টারবো প্রপেলার জাতীয় উড়োজাহাজ। সাধারণত কম দূরত্বের গন্তব্যে ফ্লাইট চালাতে এ ধরনের উড়োজাহাজ বেশ জনপ্রিয়।
এর মধ্যে বিমান ব্যবহার করে ড্যাশ এইট মডেলের উড়োজাহাজ। আর ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার ব্যবহার করে এটিআর সেভেনটি টু।
ড্যাশ এইটের কানাডিয়ান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোম্বার্ডিয়ারের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ণ জ্বালানিতে ৬৬৭ কিলোমিটার বেগে ২৭ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ে এটি সর্বোচ্চ পাড়ি দিতে পারে ২ হাজার ৪০ কিলোমিটার। আর ফ্রান্সের তৈরি এটিআর সেভেনটি টু পূর্ণ জ্বালানিতে ৫১০ কিলোমিটার বেগে ২৫ হাজার ফুট উচ্চতায় ছুটতে পারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬৫ কিলোমিটার। তবে আসন পূর্ণ থাকলে এটি যেতে পারে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯৫২ কিলোমিটার।
অর্থাৎ পূর্ণ জ্বালানিতে ড্যাশ এইট উড়তে পারে সর্বোচ্চ প্রায় ৩ ঘণ্টার কিছু বেশি সময়। আর এটিআর সেভেনটি টু উড়তে পারে প্রায় চার ঘণ্টা। তবে আসন পূর্ণ অবস্থায় উড়তে পারে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা।
দেশে এখন উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় নেয় ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট। শুধু অপ্রচলিত রুট সিলেট-কক্সবাজারে ফ্লাইট ওড়ে ১ ঘণ্টা ১৭ মিনিট। যশোর-চট্টগ্রাম রুটে ফ্লাইট চলছে; সেগুলোও লম্বা হবে। ফ্লাইট দীর্ঘ হলে চলাচল সাশ্রয়ী হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে প্রতি বছর অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে ভ্রমণে আকাশপথ ব্যবহার করেন ১৮ থেকে ২০ লাখ মানুষ। প্রতি বছর এই হার বৃদ্ধি পাচ্ছে ৬ থেকে ৮ শতাংশ হারে। বিমান অভ্যন্তরীণ রুট থেকে সরে গেলে দুটি এয়ারলাইন্স দিয়ে এই পরিমাণ যাত্রী পরিবহন করা দুরূহ হবে।