ভারতের উত্তর প্রদেশে প্রেমিককে বিয়ে করতে বাধা দেয়ায় পরিবারের সাত সদস্যকে এক রাতে হত্যা করেন শবনম আলি। ১৩ বছর আগের এ হত্যাকাণ্ডে হইচই পড়ে ভারতজুড়ে।
রাজ্যের মথুরা জেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শবনমের ফাঁসির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
শবনমের ফাঁসির দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। তবে ফাঁসির রায় কার্যকর হলে তা হবে স্বাধীন ভারতে প্রথম কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড। ৩৮ বছর বয়সী শবনম এখন রামপুর কারাগারে।
২০০৮ সালে সেলিম নামে এক প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক হয় ২৪ বছর বয়সী শবনমের। সেলিমকে বিয়ে করবেন বলে জেদ ধরে বসেন তিনি। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়া সেলিমের সঙ্গে স্নাতকোত্তর মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি হয়নি শবনমের পরিবার। তাই সেলিমের সঙ্গে পরামর্শ করে পরিবারের সদস্যদের হত্যার সিদ্ধান্ত নেন শবনম।
মা-বাবা, দুই ভাই, ভাবী, ১০ মাস বয়সী ভাইয়ের ছেলে ও এক আত্মীয়কে ঘুমের ওষুধ মেশানো দুধ খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করেন শবনম। পরে শ্বাসনালী কেটে একে একে সবাইকে হত্যা করেন।
২০১০ সালে শবনম ও সেলিমকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয় আমরোহার দায়রা আদালত। সাজা মওকুফের জন্য গত ১১ বছরে এলাহাবাদ হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেসিডেন্টের কাছে যান শবনম। নিম্ন আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করে দেখতে সুপ্রিম কোর্টে আলাদা করে আবেদনও জানান শবনম। গত বছরের জানুয়ারিতে তার আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতে প্রায় ১৫০ বছর আগে তৈরি মথুরা জেলে নারীদের ফাঁসি কার্যকর করার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো নারীকে ফাঁসি না দেয়ায় ফাঁসিকাঠ তাই অব্যবহৃত থেকে গেছে।
মথুরা জেলে পুরোদমে ফাঁসির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। জেল কর্তৃপক্ষকে শবনমকে ফাঁসিতে ঝোলানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মথুরা জেলের জ্যেষ্ঠ সুপারিন্টেন্ডেন্ট শৈলেন্দ্র মৈত্রে বলেন, ‘ফাঁসিকাঠে কিছু সমস্যা ছিল। সেগুলো ঠিক করা হচ্ছে। বিহারের বক্সার জেল থেকে ফাঁসির দড়ি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ফাঁসুড়ে পবন জহ্লাদ সব কিছু পর্যবেক্ষণ করে গেছেন।’
তবে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর পরোয়ানা হাতে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন শবনমের আইনজীবীরা।