বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পয়লা ফাল্গুনে ভোটের লড়াই চলছে ৫৫ পৌরসভায়। আজ রোববার সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এর আগে তিন দফায় ভোট হয়েছে প্রায় দেড় শ পৌরসভায়।
প্রথম দুই দফায় পরিবেশ ছিল অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ। বিতর্কও ছিল কম। তবে তৃতীয় দফায় ভালো ভোট হওয়ার পাশাপাশি অস্বাভাবিক ব্যবধান, ভোটারদের বাধা দেয়া, সহিংসতাও দেখা গেছে।
গত কয়েক বছরের মধ্যে তৃণমূলের এ ভোটে কেন্দ্রে ভোটার ফেরা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে।
তিন ধাপে বিএনপির ৩০ জনের মতো প্রার্থী যেমন কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জন করেছেন, তেমনি ভোটের পরিবেশে সন্তোষের কথাও বলেছেন অন্তত পাঁচ জন। যদিও তাদের কেউ জিততে পারেননি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা আশা করছেন, ভোট হবে শান্তিপূর্ণ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা ভোটে প্রভাব বিস্তার করবেন না।
ভোট সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সিইসি নুরুল হুদা বলেন, ‘এরপর থেকে যেসব নির্বাচন হবে সেগুলো ভালো হবে, সুষ্ঠু হবে, রক্তপাত হবে না। আমরা তো ভালোবাসার দিনেই ভোটের আয়োজন করেছি!’
ভোট ৫৫ পৌরসভায়
নির্বাচন কমিশন চতুর্থ ধাপে দেশের ৫৬ পৌরসভায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল গত ৩ জানুয়ারি। পরে সোনাইমুড়ী ও ত্রিশাল পৌরসভা এতে অন্তর্ভুক্ত হয়।
আর নাটোর ও মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার নির্বাচন উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত হওয়া ও জয়পুরহাটের কালাইয়ের ওপর থেকে আদালতের স্থগিতাদেশ উঠে যাওয়ায় এ দফায় সব মিলে ভোট হতে যাচ্ছে ৫৭ পৌরসভায়। তবে ফেনীর পরশুরাম পৌরসভায় সব পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় ভোটের প্রয়োজন পড়ছে না। আর মাদারীপুরের শিবচরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বাইরে কোনো প্রার্থী নেই।
ফলে মেয়র পদে ভোট হবে কেবল ৫৫ পৌরসভায়। আর শিবচরে ভোট হবে কেবল কাউন্সিলর পদে।
নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব ও মুখপাত্র এস এম আসাদুজ্জামান শুক্রবার জানান, এসব পৌরসভায় মেয়র পদে ২২৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৯৯ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৬৯ প্রার্থী রয়েছেন।
মোট ভোটার ১৭ লাখ ৬২৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৬ জন ও নারী ৮ লাখ ৫১ হাজার ২২৭ জন।
এসব পৌরসভার মধ্যে ৩১টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেয়া হবে; বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে।
ভোটের মাঠের দায়িত্বে রয়েছেন ৫০১ নির্বাহী ও ৫৭ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। পুলিশের ১৬৭ মোবাইল ও ৫৫ স্ট্রাইকিং ফোর্স ও র্যাবের ১৬৭ টিম মোতায়েন রয়েছে।
প্রত্যেক পৌরসভায় গড়ে দুই প্লাটুন বিজিবি ও উপকূলীয় এলাকায় প্রতি পৌরসভায় এক প্লাটুন কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ১২টি পৌরসভায় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে অতিরিক্ত র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে প্রথম ধাপে ২৪ পৌরসভায় গত ২৮ ডিসেম্বর ভোট হয়। এরপর ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৬০ পৌরসভায় ভোট হয়। সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে ৬৩ পৌরসভার ভোট হয়।
২৮ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম ধাপে ৩১ পৌরসভায় ভোট হবে। বাকিগুলোর ভোট হতে পারে আগামী ৭ এপ্রিল।
যেসব পৌরসভায় ভোট
রংপুর বিভাগ
ঠাকুরগাঁও জেলার ঠাকুরগাঁও ও রানীশংকৈল।
রাজশাহী বিভাগ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, রাজশাহীর নওহাটা, গোদাগাড়ী, তানোর ও তাহেরপুর, নাটোরের বড়াইগ্রাম ও নাটোর, লালমনিরহাটের লালমনিরহাট ও পাটগ্রাম, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর ও কালাই।
ঢাকা বিভাগ
নরসিংদীর নরসিংদী ও মাধবদী, রাজবাড়ীর রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, হোসেনপুর ও করিমগঞ্জ, টাঙ্গাইলের গোপালপুর ও কালিহাতী, মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম, শরীয়তপুরের ডামুড্যা ও ফরিদপুরের নগরকান্দা।
বরিশাল বিভাগ
বরিশালের মুলাদী ও বানারীপাড়া, পটুয়াখালীর কলাপাড়া।
ময়মনসিংহ বিভাগ
শেরপুর ও শ্রীবরদী, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহের ফুলপুর ও ত্রিশাল, জামালপুরের মেলান্দহ।
চট্টগ্রাম বিভাগ
রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, বান্দরবান, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, পটিয়া ও চন্দনাইশ, কুমিল্লার হোমনা ও দাউদকান্দি, চাঁদপুরের কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, নোয়াখালীর চাটখিল ও সোনাইমুড়ী।
খুলনা বিভাগ
বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর ও আলমডাঙ্গা, যশোরের চৌগাছা ও বাঘারপাড়া পৌরসভা।
সিলেট বিভাগ
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও সিলেটের কানাইঘাট পৌরসভা।