সমকালীন ভাষ্য

মহাশূন্যের রায়ুগু গ্রহাণুর নমুনা থেকে যা জানা যাবে

মহাশূন্য থেকে ক্যাপসূলে করে একটি গ্রহাণুর কিছু নুড়ি পাথর পৃথিবীতে আনা হয়েছে, যা একেবারে অক্ষত রয়েছে।

রায়ুগু নামের গ্রহাণু থেকে নুড়ি পাথর নিয়ে এ কন্টেইনারটি সম্প্রতি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ওমেরা এলাকায় অবতরণ করে।উদ্ধারকারীদের একটি দল বালুর ভেতর ক্যাপসুলটিকে খুঁজে পায়। প্যারাসুটটি গাছের ওপরে আটকানো ছিল।

জাপানি মহাকাশযান হায়াবুসা-২ রায়ুগু গ্রহাণু থেকে নুড়িপাথরগুলো সংগ্রহ করেছে।

পৃথিবীতে ফেরত আসার আগে রায়ুগুতে প্রায় একবছর ধরে অনুসন্ধান করে মহাকাশযানটি। পৃথিবীর কাছাকাছি আসার পর মহাকাশযান থেকে ক্যাপসুলটি বের করে যানটি অন্যদিকে চলে যায়। ক্যাপসুলটি পৃথিবীর আবহাওয়ামণ্ডলে প্রবেশ করে।

হায়াবুসা-২ এর অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয়েছে, ক্যাপসূল ও সেটির প্যারাসুট খুঁজে পাওয়া গেছে অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময় রবিবার সকালে।

”হায়াবুসা-২ বাড়ি ফিরে এসেছে,’ জাপানে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ড. ইয়ুচি তাসুডা, মিশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার।

”আমরা রত্নভাণ্ডারটি সংগ্রহ করতে পেরেছি। ক্যাপসূলটি একেবারে ঠিকমতো সংগ্রহ করা গেছে,” তিনি বলছেন। তিনি জানিয়েছেন, কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

জাপানের ইন্সটিটিউট ফর স্পেস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সায়েন্সের মহাপরিচালক ড. হিতোশি কুনিনাকা বলেছেন, ”২০১১ সালে আমরা হায়াবুসা-২ মহাকাশযানের উন্নয়নের কাজ শুরু করি। সেই স্বপ্ন আজ সত্যি হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, আগের মিশনগুলোয় অনেক কারিগরি জটিলতা দেখা গিয়েছিল। ”তবে হায়াবুসা-২ এর ক্ষেত্রে, আমরা নিয়মমতো সবকিছুই করেছি, শতভাগ করেছি। পরিকল্পনা মতো গ্রহাণুর নমুনা পৃথিবীতে আনতে সফল হয়েছি। ফলশ্রুতিতে আমরা মহাকাশ কর্মসূচীর পরবর্তী ধাপ শুরু করতে পারবো।”

পরবর্তী ধাপের মধ্যে রয়েছে এমএমএক্স নামের একটি মিশন শুরু করা, যার লক্ষ, মঙ্গলগ্রহের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ ফোবোস থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আনা।

রায়ুগু গ্রহাণুর নুড়িপাথর

উদ্ধারকারী দলে ছিলেন জাপানের অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির সদস্য সাতোরু নাকাযাওয়া। তিনি উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে বলছিলেন, ”হেলিকপ্টার নিয়ে আমরা সেখানে যাই। তখনো সেটি সংকেত দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় চারদিকে ছিল অন্ধকার, সুতরাং সেটা কোথায় ছিল, পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল না। আমি খুব খুব নার্ভাস ছিলাম।”

”আমরা ওই এলাকার ওপর দিয়ে অনেকবার ওড়াওড়ি করি এবং আমার মনে হচ্ছিল, হয়তো এটা সেখানেই আছে। এরপর সূর্য উঠতে শুরু করলো এবং আমরা ক্যাপসুলটি দেখতে পেলাম। মনে হলো, ওহ, আমরা ওটা খুঁজে পেয়েছি।”

”কিন্তু সূর্য পুরোপুরি না ওঠা পর্যন্ত আমাদের ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে,” তিনি বলছেন।

এরপর ক্যাপসূলটিকে কাছাকাছি একটি স্থানে পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পরীক্ষার জন্য এর ভেতরে থাকা গ্যাস সংগ্রহ করতে শুরু করেন বিজ্ঞানীরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button