একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ৯ আসামির মধ্যে তিন জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেয়।
রায়ে মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, এএফএম ফয়জুল্লাহ (পলাতক), আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলকে (পলাতক) আমৃত্যু দণ্ড দেয়া হয়েছে। ২০ বছর করে সাজা দেয়া হয়েছে মো. খলিলুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী, আলিম উদ্দিন খান (পলাতক), সিরাজুল ইসলাম তোতাকে।
খালাস পেয়েছেন আব্দুল লতিফ। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এই প্রথম কোনো আসামি খালাস পেলেন।
রায়ের প্রথম অংশ পড়েন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার, পরের অংশ পড়েন বিচারপতি আমীর হোসেন। এরপর মূল অংশ পড়ে রায় দেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম।
এর মধ্য দিয়ে এক বছর পর মানবতাবিরোধী আরও একটি মামলার রায় হলো। এর আগে ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহীর বোয়ালিয়ার সাবেক শিবির নেতা মো. আব্দুস সাত্তার ওরফে টিপু সুলতানের যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। রায়ে টিপু সুলতানকে প্রাণদণ্ড দিয়েছিল আদালত।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগে ২০১৮ সালের ৪ মার্চ ময়মনসিংহের ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছিল ট্রাইব্যুনাল।
তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হন ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের সাধুয়া গ্রামের মো. খলিলুর রহমান মীর (৬২), মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম (৬৫), মো. আব্দুল্লাহ (৬২), মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী (৭৪)। আর আসামি আব্দুল লতিফ স্বেচ্ছায় ট্রাইব্যুনালে হাজির হন।
বিচার চলাকালে মো. আব্দুল মালেক আকন্দ ওরফে আবুল হোসেন ওরফে আবুল মেম্বার (৬৮) ও নুরুল আমীন শাজাহানের মৃত্যু হয়।
পলাতক রয়েছেন এএফএম ফায়জুল্লাহ, মো. আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল, সিরাজুল ইসলাম ও মো. আলীম উদ্দিন খান।
আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের চারটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
এর মধ্যে রয়েছে ৪ জনকে হত্যা, ৯ জনকে আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ।
মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের সাধুয়া গ্রাম ও টাঙ্গাব ইউনিয়নের রৌহা গ্রাম এলাকায় তারা এসব অপরাধ করেন বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।