
অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে প্রায় ৫০০ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে আনতে ধরপাকড় বাড়িয়ে দিয়েছে জান্তা সরকার। তবে তা উপেক্ষা করে দিন দিন রাজপথে বড় হচ্ছে বিক্ষোভ।
গতকাল বুধবার রাতে দেশটির সেনাবাহিনী ছয় তারকাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করে। তাদের মধ্যে চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা ও সংগীতশিল্প রয়েছেন। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যোগ দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করার অভিযোগে প্ররোচনাবিরোধী আইনে এ পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁদের সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
অভিনেতা লিউ মিন এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমাদের জনগণের ঐক্য দেখে বিমোহিত। জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে অবশ্যই ফেরত আসবে।
সরকারি কর্মচারীদের কাজে যোগ দিতে বলছে জান্তা। অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এসব হুমকি-ধমকি সত্ত্বেও অনেকে সামরিক শাসনবিরোধী ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছেন। এতে অনেক সরকারি অফিস অচল হয়ে পড়েছে।
ধর্মঘটের পাশাপাশি দেশটিতে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ৬ ফেব্রুয়ারি টানা বিক্ষোভ চলছে।
দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মানদালেতে গতকাল রাতে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি ছোড়ে। সেখানে রেলওয়ের কর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় নিরাপত্তা বাহিনী। অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন রেলওয়ের কর্মীরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ হচ্ছে। ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছের একটি ব্যস্ততম সড়কদ্বীপে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের বাড়িতে বাড়িতে পর্যন্ত হানা দিচ্ছেন।
পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গতকাল পর্যন্ত ৪৯৫ জনকে আটক বা গ্রেপ্তার করে জান্তা। তার মধ্যে ৪৬০ জন এখন বন্দী অবস্থায় আছেন।
মিয়ানমারে গত নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল জয় পায়। কিন্তু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে সেনাবাহিনী। তারা পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সামরিক অভ্যুত্থান করে। তারা সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে। একইসঙ্গে সু চিসহ শীর্ষ নেতাদের আটক করা হয়। মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে সেনা কর্তৃপক্ষ।