
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস) থেকে দিন রাত ১৬ বার সূর্যাস্ত ও সূর্যদোয় দেখা নভোচারীদের কাছে বিলাসিতা নয়। তবে আইসক্রিম খাওয়া অবশ্যই দিবাস্বপ্ন।
তবে এবার এ কষ্ট কিছুটা হলেও ঘুচবে। পৃথিবী থেকে তিনটি রেফ্রিজারেটর যাচ্ছে আইএসএসে। তাদের জন্য এ ফ্রিজ তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর গবেষক ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নাসা দুই বছরের চুক্তি করে তাদেরকে আটটি ফ্রিজ তৈরি করতে দিয়েছে।
এ ফ্রিজ পৃথিবীর ফ্রিজের থেকে কিছুটা আলাদাভাবে কাজ করবে। সাধারন ফ্রিজ ভেতরটা ঠাণ্ডা রাখে কিন্তু বাইরে তাপ ছাড়ে। মহাকাশে তাপ সৃষ্টি হলে তা বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না, এক জায়গায় স্থির থাকে। ফলে ফ্রিজ অতিরিক্ত গরম হতে পারে। এ সমস্যা এড়াতে আইএসএসে থাকা ওয়াটার কুলিং সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে তাপ বের করে ফ্রিজ ঠাণ্ডা রাখা হবে।
এমন নয় যে আইএসএসে ফ্রিজ নেই। তবে সেটা খাবার রাখাতে নয়, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়। সেগুলোর নাম ফ্রিজ নয়, সায়েন্স ইনকিউবেটর। যখন জীববিজ্ঞান নিয়ে কোনো প্রজেক্ট থাকে না তখন এগুলোতে খাবার রাখা যায়। তবে খাবার রাখার অনুমতিও মিলেছে সম্প্রতি।
এটুকু সুবিধা পেয়ে নভোচারীরা এতো খুশি হন যে নাসা তাদের জন্য আলাদাভাবে ফ্রিজ তৈরির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এ ছাড়া তাদের মিশন কয়েক বছর মেয়াদি হয়ে থাকে। তাই নাসা চায় নভোচারীরাই নিজেদের জন্য তারতাজা খাবার উৎপাদন করুক। উৎপাদন শুরু করলে সংরক্ষণেরও প্রয়োজন পড়বে। সে চিন্তা থেকেই ফ্রিজ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
পাহাড়ে ট্র্যাকিং করতে যেমন কয়েক দিনের রসদ সঙ্গে নিতে হয় তেমনি মহাকাশে যাওয়ার সময়ও নভোচারীরা খাবার সঙ্গে নেন। যেগুলো পচবে না সেগুলোই শুধু নিয়ে যেতে পারেন। চাইলে তারা গরুর মাংসও খেতে পারেন তবে সেগুলো বিস্কিটের মতো শক্ত করে প্রক্রিয়াজাত করা থাকে। প্যাকেট থেকে বের করে খেতে হয়। এই প্যাকেটও বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। মহাকাশে লবন ও গোলমরিচের গুঁড়া খাওয়া মানা। কারণ এগুলো উড়ে বেড়ায়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় আটকে যায়। নভোচারীদের চোখে মুখেও এগুলো ঢুঁকতে পারে। তাই লবন ও গোলমরিচ শুধু লিকুইডই খেতে হয়।