প্রযুক্তি

রেমিট্যান্স খাতে প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাব

রেমিট্যান্স বদলে দিয়েছে অনেক দেশের অর্থনীতি। পরিবর্তন এনেছে মানুষের জীবনে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের হিসেবে, ২০১৯ সালে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৭০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। করোনায় পর্যদস্তু ২০২০ সালে ৭৩৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসে এসব দেশে। ২০২১ সালে যা ৭৬৮ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়ছে। বিশ্বায়ন, নির্ঝঞ্ঝাট ভিসা প্রসেস ও এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে জীবিকার তাগিদে অনেক প্রবাসী হচ্ছেন। এসবকিছুর সঙ্গে প্রযুক্তি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

ইন্টারনেট
ইন্টারনেট এখন আর বিলাসী পণ্য নয়। বরং নিত্য প্রয়োজনীয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, করপোরেট সংস্থা- ইন্টারনেট ছাড়া অচল বলা যায়। ইন্টারনেট আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স সিস্টেমেও এনেছে বড় পরিবর্তন। আগে টাকা পাঠাতে মানি অর্ডার ও ডিমান্ড ড্রাফটের উপর নির্ভর করতে হতো। বেশ সময়সাপেক্ষ ছিল এসব প্রক্রিয়া। ঝামেলাও কম ছিল না।

ডিজিটাল পদ্ধতি আসার পর বিশ্বের যে কোন প্রান্তের গ্রাহক এখন সহজে ও কম খরচে টাকা পাঠাতে পারছেন। আজকাল প্রায় সব দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যাংক রেমিট্যান্সসেবা দিয়ে থাকে। অনলাইন ব্যাংকিং ও অনলাইন রেমিট্যান্স মানি ট্রান্সফার সিস্টেম ব্যবহার করে প্রবাসীরা সহজে তাদের পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে পারে।

মোবাইল মানি প্রযুক্তি
মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু হলে রেমিট্যান্স খাতে আরও বড় পরিবর্তন আসে। এতে টাকা পাঠানো আরো সহজ হয়। বেশিরভাগ ব্যাংকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিটেন্স ট্রান্সফারের সুযোগ রয়েছে।

আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা ক্রেডিট বা ডেবিট হলে সঙ্গে সঙ্গে তা ফোনে এসএমএস দিয়ে জানানো হয়। এ ছাড়া মোবাইল ফোন কল করে ও এসএমএস ব্যবহার করে ফান্ড ট্র্যাক করা বা টাকা ট্রান্সফারে কোনো গড়মিল বের করা যায় নিমিষে। ফাইভ জি প্রযুক্তি আসার পর এ সেবার মান আরো উন্নত হবে।

মানি ট্রান্সফার ব্যবসা
অনেক রেমিট্যান্স সার্ভিস ও অ্যাপ দিয়ে কয়েক ক্লিক করে অর্থ ট্রান্সফার করা যায়। যেমন ফিনটেক সার্ভিস। এর রয়েছে গ্লোবাল ফুটপ্রিন্ট। বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে তাই ফিনটেক সার্ভিস ব্যবহার করা যায়। যেখানে কোনো ব্যাংকিংসেবা নেই, সেসব জায়গায়ও টাকা পাঠানো সম্ভব ফিনটেকের মাধ্যমে। ফিনটেক সেবাদানকারীরা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার জন্য প্রায়ই আকর্ষণীয় এক্সচেঞ্জ রেট ও কম ট্রান্সফার ফি অফার করে থাকে। বিশ্বাসযোগ্য ও কম খরচের মাধ্যম বলে অনেকের আগ্রহ রয়েছে এর উপর।

রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য এখন পর্যন্ত ইন্টারনেট, ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ব্যাংকিং, নেট ব্যাংকিং ও ফিনটেক সার্ভিস ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রযুক্তির কল্যাণে ভবিষ্যতে আরো নতুন ও সহজতর সেবা উপভোগ করা যাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button