আমাদের দেশের নারীরা অনেক দূর এগিয়েছে। শিক্ষা, কর্মস্থল ও সৃজনশীলতায় নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পেরেছে তারা। কাজের এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে নারীর অবস্থান নেই। একটা সময় ছিল, কোনো কোনো কাজে নারীদের অংশগ্রহণ অঘোষিতভাবে প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। সেসব দিন গত হয়েছে। অনেক আগেই বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার লাভ করেছে।
এত কিছুর পরও নারী নিগ্রহ বন্ধে আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করা যায়নি। নারী নিগ্রহের নানা ঘটনা ঘটছে। ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে সব বয়সের নারী। সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার ধর্ষণের শাস্তি আরও কঠোর করেছে। দ্রæত ধর্ষণের বিচার হচ্ছে দেশে। এগুলো ইতিবাচক দিক। ধর্ষণ বিষয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এসেছে। একসময় ধর্ষিতাকে বাঁকা দৃষ্টিতে দেখা হতো। ‘ধর্ষিতা’ শব্দের পরিবর্তে আমরা ‘ধর্ষণের শিকার’ শব্দটি ব্যবহার করছি। এটাই তো সত্য, ধর্ষণ একটি দুর্ঘটনা। এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তির বিচার হবে।
ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতার যথাযথ বিচার হলে তা কমে আসবে। তবে এ কথাও সত্যি, শুধু আইনের প্রয়োগ দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতার মূল উৎপাটন করা যাবে না। এর জন্য চাই সামাজিক সচেতনতা। নারী নিগ্রহের এই ব্যাধি দূর করতে মানবিক মূল্যবোধের চর্চা ও এর বিকাশ প্রয়োজন। আমাদের স্বপ্ন ও সংগ্রামের জায়গাটি হচ্ছে, একটি মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। সবার দায়িত্ব ও কর্তব্যের সমষ্টিগত প্রয়াসে যে সমাজ গড়ে উঠবে, সেখানে নারী নিগ্রহ শুধু নয়, সব নিগ্রহ ও নিষ্ঠুরতার অবসান ঘটবেÑ এমন প্রত্যাশাই ব্যক্ত করছি।