
দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের পাশাপাশি দেশের বিত্তবানদের সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে দেশ থেকে চিরতরে দারিদ্র্য দূর করতে।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে ‘মুজিববর্ষে গৃহহীন মানুষকে সরকারের সচিবগণের গৃহ উপহার’ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। গণভবন থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শুধু নিজে ভালো থাকবো, সুন্দর ও আরাম আয়েশে থাকবো আর আমার দেশের মানুষ, এলাকার মানুষ কষ্টে থাকবে, এটাতো মানবতা না, এটাতো হয় না। কাজেই সবাই মিলে চেষ্টা করলে দেশে আর কোনো দরিদ্র মানুষ থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুব সাহসী। তাদের নিয়ে যুদ্ধ করেই জাতির পিতা দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। কাজেই বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো। সে সময় বিশ্বে অন্যতম শক্তিশালী সেনাবাহিনী হিসেবে পাকিস্তানি বাহিনীর গর্বিত আচরণ স্মরণ করিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, তারা খুব গর্ব করতো, তাদের আবার কে হারাবে, কিন্তু বাঙালিরা তাদের হারিয়ে যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী যে যেখানে আছেন প্রত্যেকের কাছে আমার অনুরোধ, যে যে স্কুলে পড়াশোনা করেছেন এবং যে গ্রামে জন্মেছেন তার উন্নয়নে যেন সহযোগিতা করেন।
করোনার মধ্যে তার সরকারের গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সাহায্য পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, যারা বিত্তশালী তারা নিজ নিজ এলাকার দুস্থদের দিকে যেন ফিরে তাকান। গৃহহীনকে ঘর করে দেন বা তাদের কিছু সাহায্যের ব্যবস্থা করে দেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও পরিকল্পনা গ্রহণের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, করোনার কারণে অনেক কাজ থমকে গেছে। তারপরও তৃণমূলের মানুষ যেন ভালো থাকে সে লক্ষ্যে তাদের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।
মুজিববর্ষে নিজস্ব অর্থায়নে গৃহহীনদের ঘর উপহারের জন্য সংশ্লিষ্ট সচিবদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে যে মানুষগুলোর পাশে আপনারা দাঁড়িয়েছেন, মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন, একটা ঘর করে দিয়েছেন, আপনারা একটা মহৎ কাজ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, ভবিষ্যতে মানুষজন আপনাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে ও মানুষের পাশে দাঁড়াবে। ফলে বিশ্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ হয়ে গড়ে উঠবে বাংলাদেশ। আমরা জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করবো।
উল্লেখ্য, মুজিববর্ষে দেশের সব গৃহহীনকে ঘর করে দেয়ার সরকারের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৮০ জন সচিব নিজ নিজ এলাকায় ১৬০ গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছেন।