অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান:
বিবিসি বাংলা বিভাগের ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি’ শীর্ষক ২০০৪ সালের শ্রোতা জরিপ বেশ সময়োপযোগী ছিল বলে আমরা মনে করি। বাংলা ও বাঙালিত্বের চলমান ক্রান্তিকালে এ জরিপ উপলক্ষে বিবিসির ভাষ্যে যেমন স্মরণীয় বাঙালিদের জীবন ও কীর্তিগাথার একটা পরিচয় পাওয়া গেছে, তেমনি শ্রোতা জরিপের অংশগ্রহণকারীরাও নিজেদের পছন্দ জানানোর সূত্রে বাঙালি মনীষার ইতিহাসচর্চার একটা সুযোগ পেলেন। সেসঙ্গে জানতে-বুঝতে পারলেন অন্য বাঙালি শ্রোতাদের চিন্তাভাবনা। অন্যদিকে বাংলাদেশে কল্পিত-বিকৃত ইতিহাসচর্চার যে একটা দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে,তারাও ব্যাপক জনমত থেকে একটা বার্তা পেলেন। তারা জানতে পারলেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সুবাদে ইতিহাসের বিবৃতি ঘটানো যেতে পারে; কিন্তু সামান্য ও সাধারণকে অসামান্য ও মহানায়কে পরিণত করা যায় না। বাংলাদেশে ইতিহাস-বিকৃতি ও মতলবি ইতিহাস রচনার এই নষ্ট-ভ্রষ্ট সময়ে এ জরিপের মাধ্যমে হাজার বছরের বাঙালির ইতিহাসের ধারাকে একটা নির্ভরযোগ্য ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো হলো। কাজটি সম্ভব হয়েছে বিবিসির একটি সুচিন্তিত উদ্যোগের ফলে। এই কাজের জন্য আমরা বিবিসিকে অভিনন্দন জানাই। আমরা আশা করব, এই প্রয়াস আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বাঙালি ও বাঙালি মনীষার বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাসচর্চায় উদ্বুদ্ধ করবে।
বিবিসির শ্রোতা জরিপে যে কুড়িজন বিশিষ্ট বাঙালিকে ‘সর্বকালের শ্রেষ্ঠ কুড়ি বাঙালি’ নির্বাচন করা হয়েছে, সত্যনিষ্ঠ ও সচেতন যেকোনো মানুষ তাকে বিদ্যমান অবস্থায় ভালো নির্বাচন বলেই মনে করবেন। তবু কোনো কোনো ক্ষেত্রে কারো কারো কিছু ভিন্নমত বা দু-একটি ক্ষেত্রে ভিন্ন পছন্দ থাকবে না এমন নয়। সেটা স্বাভাবিক এবং তা নিয়ে সুস্থ বিতর্কও হওয়া উচিত। সেটা হলেই বরং বলা যাবে যে, বিবিসির উদ্যোগ একটা জাগ্রত কৌতূহল ও বিচার-বিবেচনা ও যুক্তিশীলতাকে সামনে এনেছে। আমরা আশা করব, এই সুস্থ বিচার-বিবেচনার ধারা বাঙালির ইতিহাসচর্চায় প্রাধান্য পাবে। দলীয়, ক্ষুদ্র-স্বার্থ প্রণোদিত মূল্যায়ন নয়, যাঁর যা প্রাপ্য তাকে সেই মর্যাদা দিয়েই আমাদের সম্মুখ যাত্রাপথ নির্বাচন করতে হবে।
বিবিসির শ্রোতাদের ইতিহাসবোধ ও সচেতনতাকে শ্রদ্ধা জানিয়েও দু-একটি ক্ষেত্রে আমাদের কিছু ভিন্ন পছন্দের কথা বলব। উল্লেখ্য, এ জরিপে আমি নিজের কোনো পছন্দের তালিকা পাঠাইনি এবং আমার সমমনা বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ করে দেখেছি তারাও তাদের পছন্দের তালিকা পাঠাননি; কিন্তু যেদিন থেকে জনমত জরিপের ফলাফল ঘোষণা শুরু হলো সেদিন থেকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে এবং আগ্রহের সঙ্গে এই প্রোগ্রাম শুনেছি এবং প্রোগ্রামটি যে নিয়মিত এবং অনিয়মিত শ্রোতাদের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল তা লক্ষ করেছি। এই আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারাতেই বিবিসির বাংলা সার্ভিসের সার্থকতা। এবার নিজের পছন্দের কিন্তু নির্বাচিত কুড়িতে না থাকা দুই মহান পুরুষের কথা উল্লেখ করব। তাঁরা হলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ও ষোড়শ শতকের বাংলা বিপুল জনপ্রিয় ধর্মসংস্কারক ও মহান সাধক শ্রীচৈতন্য দেব। কুড়িজনের মধ্যে তাঁদের নাম না থাকায় আমি কিছু বিস্মিত হয়েছি। আমি আমার তালিকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও জিয়াউর রহমানকে বাদ দিয়ে ওই দুজনকে অন্তর্ভুক্ত করব।
যা হোক, আজ থেকে ৩৩ বছর আগে (১৯৮৭) আমি একটি গবেষণামূলক লেখার মাধ্যমে বাংলা ও বাঙালিত্বের ইতিহাসে দু’হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ পুরুষ কে, সে প্রশ্নটি উত্থাপন করে অন্য মহানদের সঙ্গে তুলনায় বঙ্গবন্ধুকে শ্রেষ্ঠ আসনটি দিয়েছিলাম। বিবিসির শ্রোতা জরিপেও বঙ্গবন্ধুকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির আসনটি দেয়া হয়েছে। এতে আমি খুশি হয়েছি এবং বিপুলসংখ্যক শ্রোতার সঙ্গে আমার মতের এই মিল আমাকে দারুণভাবে অভিভূত করেছে। তবে সততার খাতিরে আমাকে বলতেই হবে প্রয়াত প-িত ড. মুহম্মদ এনামুল হকই আমাকে তাঁর বঙ্গবন্ধু-মূল্যায়ন দ্বারা প্রভাবিত করেছিলেন। ড. হক বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বিস্তৃত ব্যাখ্যায় না গিয়ে বলেছিলেন: ১. বঙ্গবন্ধু দু’হাজার বছরের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি; ২. বঙ্গবন্ধুর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ‘এসমে আজম’। জ্ঞানবৃদ্ধ দেশপ্রেমিক এ প-িতের উক্তি দুটি আমাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। তারই ফলে আমি ওই দীর্ঘ গবেষণামূলক প্রবন্ধটি (দ্র. ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ ও প্রাসঙ্গিক কথকতা’ শীর্ষক গ্রন্থ: পৃষ্ঠা ৩৭-৫০, আগামী প্রকাশনী-১৯৯৫’) লিখি। প্রবন্ধটি প্রথমে ‘দৈনিক সংবাদে’ প্রকাশিত হয় (১৯৮৭)। বঙ্গবন্ধুকে দু’হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি আখ্যায়িত করায় তখন কেউ কেউ একটু ঠাট্টা-বিদ্রƒপও করেন এবং বঙ্গবন্ধুবিষয়ক একটি সংকলন গ্রন্থের সম্পাদক আমার প্রবন্ধটি তাঁর সংকলন গ্রন্থে প্রকাশ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু বলেন যে, লেখার নামটি পরিবর্তন করে, ‘মহানায়ক বঙ্গবন্ধু’ বা এই রকম কিছু রাখতে হবে- তাঁকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বলা যাবে না। আমি এ প্রস্তাবে রাজি না হয়ে লেখাটি তাঁকে আর দেইনি।
আমার উপর্যুক্ত প্রবন্ধ থেকে কিছু অংশ চয়ন করি। বঙ্গবন্ধু কি প্রকৃতই দু’হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি? অতীশ দীপঙ্কর (বিবিসির শ্রোতা জরিপে অষ্টাদশ স্থানপ্রাপ্ত), চৈতন্য দেব এই সময়ে মধ্যে আবির্ভূত মহান বাঙালি। দুজনই অসাধারণ, তাঁদের কর্মক্ষেত্রেও বিস্তৃত, কিন্তু এক অর্থে তা আবার সীমিতও। অতীশ দীপঙ্কর প-িত ও ধর্মবেত্তা, হয়তো বাঙালি মনীষার শ্রেষ্ঠ উদাহরণও তিনি। এমনকি একথাও স্বীকার্য যে এক সময়ে বহির্বিশ্বে তিনিই ছিলেন স্বীকৃত বাঙালি প-িত ও মহামান্যবান ব্যক্তি। কিন্তু যাকে বলে সর্বত্রগামী, তিনি তা ছিলেন না। তিনি প-িতদের প-িত, বহু জটিল চিন্তার উন্মোচক এবং সারস্বত সমাজের উজ্জ্বল জ্যোতিক। কিন্তু ব্যাপক বিপুল গণমানুষের আত্মার আত্মীয় তিনি হতে পারেননি। চৈতন্য দেব সেদিক থেকে ভিন্ন এক নেতা। তিনি বিদ্রোহী, সনাতন ধারা ও শাস্ত্রীয় ধর্মের কঠোর সমালোচক। তিনি প-িত, তার্কিক, শাস্ত্রজ্ঞ, অভিজাত। হিন্দু সমাজের কঠোর জাতিভেদ আর বৈষম্য তাঁর মূল আঘাতের কেন্দ্র। তিনি জাতি ভেঙে গড়ে তুলেছিলেন এক নতুন জাতি, মানবজাতি। প্রেমের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন বর্ণভেদপ্রথা, পথের বাধা আর নৈরাজ্য নিষ্ঠুতার বিভীষিকাকে। … ঐতিহাসিকভাবে চৈতন্যের অবদান বিরাট। এক নবযুগ আর নবভাব বিপ্লবের তিনি অগ্নিশিখা। কিন্তু তাঁর ভাববিপ্লব সমাজে বড় রকমের একটা আন্দোলন সৃষ্টি করলেও সমাজ ও রাষ্ট্র বিপ্লব বলতে যা বুঝি, তিনি তা করতে পারেননি- সমাজের উপরিতলে একটা প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।
অন্যদিকে রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ব প্রেক্ষাপটেও বিশিষ্ট প্রতিভা, বাংলাদেশের পটভূমিকায় মহত্তম; কিন্তু তাঁদের কৃতি ও কীর্তি চূড়ান্ত বিশ্লেষণে সর্বব্যাপী নয়। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজ চিন্তায় তাঁরা দিকপাল। বাঙালি জাতির রুচি ও জাতিসত্তা গঠন এবং তাদের খ-িত জাগরণে তাঁদের ভূমিকা তুলনারহিত। ঔপনিবেশিক বাংলায় বাঙালি জনগোষ্ঠীর স্বাধিকার ও জাতিসত্তা গঠনের বিষয়ে তাঁদের ভূমিকা ছিল পরোক্ষ ও দূরবর্তী। কিন্তু একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, জনগণতান্ত্রিক বাঙালি রাষ্ট্র গঠনে তাঁদের ভূমিকা সঙ্গত কারণেই কারো কারো ক্ষেত্রে অকল্পনীয় এবং কারো ক্ষেত্রে পরোক্ষ। সেজন্যই বলা চলে যে, বাঙালি সার্বিক জাগরণের সূত্রপাত ও স্বাধীনতা অর্জনে তাঁদের ভূমিকা কারো কারো জীবনে বলবান পার্শ্বচরিত্র অভিনেতার, মূল ভূমিকাটি শেখ মুজিবুর রহমানের। অন্যদিকে উনিশ ও বিশ শতকে ভারতের জাতীয় আন্দোলনে সুরেন বাড়ুয্যে, বিপিনচন্দ্র পাল, চিত্তরঞ্জন দাশ জনগণকে বহুল পরিমাণে জাগ্রত চেতনায় অনুপ্রাণিত করতে পেরেছিলেন। তবে তাঁদের পেছনে কাতারবন্দি হয়েছে মূলত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ও উঠতি ধনিকশ্রেণি এবং জোতদাররা। তাঁরা বাঙালির রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখেননি। তবে চিত্তরঞ্জন দাশ হিন্দু-মুসলমান সমস্যার মূলে হাত দিয়ে রাজনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর ১৯২৩-এর বেঙ্গল প্যাক্ট ছিল তাৎপর্যপূর্ণ, কিন্তু ১৯২৫ সালে তাঁর মৃত্যু এই মহান নেতার ভবিষ্যৎ কর্মকা-ের ইতি টেনে দেয়।… নেতাজী বসু অসাম্প্রদায়িক ও গণসমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র আন্দোলনে গিয়েছিলেন; কিন্তু নির্ভরশীল হয়েছিলেন অন্য একটি গণবিরোধী বৈদেশিক শক্তির ওপর এবং শেষ পর্যন্ত তিনি একটি রাষ্ট্র গঠনে সক্ষম হননি। গণমুখী রাজনীতির বিকাশে এ কে ফজলুল হকের অবদান বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। তিনি বাংলার কৃষককে রাজনীতি সচেতন করে তাদের ঋণমুক্তির জন্য ঋণসালিশি বোর্ড গঠন করে তাদের ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি দেন। কিন্তু পূর্ববঙ্গ বা পূর্ব পাকিস্তানে তিনি জনপ্রিয় ও কিংবদন্তিপ্রতিম রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত পেলেও এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদ সৃষ্টিতে অবদান রাখলেও বাঙালির স্বায়ত্তশাসন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা অর্জনে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেননি। এ পটভূমিকায় শেখ মুজিবুর রহমানে ভূমিকা মৌলিক ও স্থির লক্ষ্যমুখী। ছাত্রজীবন থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে তাঁর ভূমিকা অঙ্গীকারদৃপ্ত ও নিষ্ঠাপূর্ণ। এক্ষেত্রে তাঁর সাহস, জেলজুলুম-নির্যাতন সহ্য করার ক্ষমতা, জীবনব্যাপী ত্যাগ, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়জ্ঞান এবং দেশের সব মানুষকে একই সংহতি- দৃঢ় রাজনৈতিক ঐক্যে হৃদয়গতভাবে প্রথিত করে স্বাধীনতার জন্য জীবনপণ লড়াইয়ে প্রস্তুত করা এবং এভাবেই বাংলাদেশের মানুষের বিপুল ভোটে নির্বাচিত নেতা হিসেবে অবিসংবাদিত হয়ে ওঠা এবং স্বাধীনতাকে শেষ পর্যন্ত সম্ভব করে তোলার মধ্যে যে অনন্যতা ছিল, তা আর কারো মধ্যে দেখা যায়নি। শুধু তাই নয়, গোটা উপমহাদেশে পাঞ্জাবি, বেলুচি, সিন্ধি, মারাঠি, তামিল, তেলেগু, কন্নরি প্রভৃতি বড় বড় জাতি থাকলেও বাঙালিদেরই একমাত্র স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র আছে। এর কৃতিত্ব শেখ মুজিবের। সেজন্যই তিনি বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। দার্শনিক হেগেল মনে করতেন, যে মহাপুরুষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে ফেলতে পারেন, তাঁর কৃতিত্ব প্রায় ঐশ্বরিক; অলৌকিক ক্ষমতা ছাড়া রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না। হেগেলের এ মতের ভাববাদী অন্তঃসার বর্জন করে আমরা বলতে পারি, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই শ্রেষ্ঠতম কর্ম। বঙ্গবন্ধু সেই কাজে সফল হয়েই সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালির স্তরে উন্নীত হয়েছেন। সাহিত্য, সংস্কৃতি, দর্শন বা বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রেষ্ঠত্ব বা সংস্কারকের সাফল্য এর সঙ্গে তুলনীয় নয়, সেজন্য তালিকায় শীর্ষ নামটি তাঁর। এতে বিবিসির শ্রোতাদের প্রজ্ঞা ও বিবেচনা শক্তির পরিচয় আছে।
শ্রোতাদের ভোটে ভাষাশহীদদের ১৫তম স্থান লাভও তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলার এবং বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগের এই স্বীকৃতি শ্রোতাদের তীক্ষè রাজনৈতিক বোধ ও ইতিহাস সচেতনতার পরিচয়ক, তেমনি তিতুমীর-লালন ফকিরের অন্তর্ভুক্তির লোকায়তিক ও ধর্মস্পর্শী বিবেকী দ্রোহ চেতনায় তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা বিবিসি ও তাদের জরিপে অংশগ্রহণকারী শ্রোতাদের আরেকবার ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তীতে মহান রাষ্ট্রনায়ক ও আমাদের জাতির পিতার প্রতি রইল আমাদের শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধার্ঘ্য।
লেখক: সভাপতি, বাংলা একাডেমী।