আইন-আদালত

সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলা ৩ মাসে নিষ্পত্তির নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেড় যুগ আগে বিরোধী দলীয় নেতা থাকার সময় সাতক্ষীরায় তার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় করা একটি মামলা তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছে হাই কোর্ট।

রাকিবুর রহমান নামে একজন আসামির ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম বাতিলের প্রশ্নে এর আগে জারি করা রুল খারিজ করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেয়।

আসামি রাকিবুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন, আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।

২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা হয়েছিল।

এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি রাকিব ২০১৭ সালে হাইকোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। সেখানে বলা হয়, ঘটনার সময় তার বয়স ছিল দশ বছর।

সে আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ অগাস্ট হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেয়। সে সঙ্গে মামলা বাতিল প্রশ্নে রুল জারি করে।

মামলাটি এরপর সেভাবেই পড়ে ছিল। বিষয়টি জানার পর সম্প্রতি এ সংক্রান্ত রুল শুনানির উদ্যোগ নেন অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল এস এম মুনীর।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর মামলা বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। কয়েক দফা শুনানির পর বৃহস্পতিবার রায় দিল আদালত।

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত রুল খারিজ করে দিয়েছে। যেহেতু পুরনো মামলা, তাই তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছে। আর আবেদনকারীকে শিশু বলা হলেও অভিযোগপত্র দেওয়ার সময় তার বয়স ১৬ বছরের বেশি ছিল। তাই শিশু আদালতে তার বিচারের প্রয়োজন নেই।”

ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ অগাস্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার সময় কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়ি বহরে হামলা হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয়।

শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা সেদিন আহত হন। ওই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

এক যুগ পর ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেয়।

তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর ২০১৭ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হলে আসামিপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করে। ফলে মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button