
মেহেদি হাসান মিরাজ একাই চেষ্টা করে গেলেন। তাইজুল ইসলাম বিদায় নেন যখন, তখনও জয়ের জন্য চাই ৬৮ রান। নাঈম হাসানের বিদায়ের সময় দরকার আরও ৪৩।
নাহ, মিরাজ বেন স্টোকস হতে পারেননি। মিরপুরে হেডিংলি নেমে আসেনি। অল্প অল্প করে চাওয়াটা কমিয়ে ১৮ রানে নিয়ে এসে মিরাজ জোমেল ওয়ারিকানের বলে ধরা পড়েন স্লিপে। চোখে অবিশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে থাকেন। দেখতে থাকেন ক্যারিবীয়দের উল্লাস।
মিরাজের ক্যাচটা নিয়েছেন রাখিম কর্নওয়াল। আর কে-ই বা নেবেন! পুরো টেস্টে যে তিনি একাই ঘোল খাইয়ে ছাড়লেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে চারটি। সঙ্গে স্লিপে দাঁড়িয়ে তিনটি ক্যাচ। ঢাকা টেস্ট তো কর্নওয়ালেরই!
অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১১৭ রানে গুটিয়ে দেয়ার পর বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য খুব বড় মনে হয়নি। ২৩১ রান এর আগে ঢাকার পিচে তাড়া করা যায়নি। সে রেকর্ডকে বুড়ো আঙুল দেখাতেই যেন তামিম ইকবাল ব্যাট চালালেন খোলা তরবারির মত। মাত্র ৪৪ বলে ফিফটি করেন।
অন্য প্রান্তে সৌম্য ধীরস্থির ছিলেন। কিন্তু হুট করে পার্ট টাইমার ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েইট বোলিংয়ে আসায় ওমন অদ্ভূতুড়ে শট কেনো খেলতে গেলেন, সেটি তিনিই ভালো জানেন। সৌম্যের কিছুক্ষণ পর একই বোলারের বলে ফিরে গেলেন তামিমও।
বাকিটা সময় ব্যাটসম্যানদের পালা শুধু সেট হওয়ার ও ফিরে যাওয়ার। ব্র্যাথওয়েইটের জোড়া আঘাতের পর কর্নওয়াল ফেরালেন নাজমুল হোসেন শান্তকে।
ওয়ারিকানের আঘাতে ফিরলেন মুশফিকুর রহিম। রিভিউ নেন উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিয়ে। ব্যাটে যে লেগেছে, তার প্রমাণ পেতে সময় লাগেনি। কর্নওয়াল ফেরান মোহাম্মদ মিঠুন ও লিটন দাসকে। মাঝখানে ওয়ারিকান মুমিনুল হককে। লিটন আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের আশার প্রদীপ নিভুনিভু হয়ে ছিল।
শেষ বেলায় মিরাজের শেষ চেষ্টা। তিনি পারলেন না। ওয়ারিকানের বলে ৩১ রানে ফিরে গেলেন। বাংলাদেশের ভাগ্যে জুটল ২-০ ব্যবধানে হার।
২০১২/১৩ সালের পর এই প্রথমবার ঘরের মাটিতে টেস্ট সিরিজে সব ম্যাচ হারল বাংলাদেশ। এ সিরিজ দিয়ে ১৫তম বারের মত ক্লিন সুইপ হলো বাংলাদেশ, যা টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
করোনাভাইরাস প্রকোপ কাটিয়ে রঙিন পোশাকে ফেরাটা দারুণ হলেও, টেস্টে হলো না সেটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য স্পিনের ফাঁদ পেতে সেই ফাঁদে পড়তে হলো বাংলাদেশকেই। স্পিনের বিষে কাবু করার বদলে টাইগাররা নিজেই কাবু হলেন কর্নওয়াল-ওয়ারিকানদের কাছে। ম্লান হয়ে গেল বসন্ত উৎসব।