তৃণমূল পর্যায়ে আবার শুরু হয়েছে ভোট। প্রথম ধাপে ২৪ ও দ্বিতীয় ধাপে ৬০টির পর তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভায় ভোট হচ্ছে।
আজ শনিবার সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
অনিয়ম ঠেকাতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় কেন্দ্রগুলোয় ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে ভোটের সকালে।
১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ভোট হয় ৬০ পৌরসভায়। ওই দিন যেসব কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে ভোট হয়েছিল সেগুলোতেও সকালে পাঠানো হয় হয়েছিল ব্যালট পেপার। এমন নজির এর আগে দেশের কোনো নির্বাচনে দেখা যায়নি।
তৃতীয় ধাপের নির্বাচনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মাঠে রয়েছে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।
নির্বাচনি লড়াইয়ে আছে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। মেয়র পদে লড়ছেন বেশ কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থীও। প্রথম দফায় পৌর নির্বাচনে ভোট পড়ে ৬৫ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ৬২ শতাংশ। দুই দফায় ভোট হয়েছে মোট ৮৪ পৌরসভায়। এর মধ্যে বেশির ভাগ এলাকাতেই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হলেও কিছু এলাকায় ভোট নিয়ে অভিযোগও উঠে।
বহুদিন পর কেন্দ্রে ভোটার ফেরা ছিল পৌরসভা নির্বাচনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। অবশ্য এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবার ভোটের নিম্নহার নিয়ে তৈরি হয়েছে সমালোচনা।এর তিন দিন পর আবার তৃণমূলের এই ভোট বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে পারে।
ইসির যুগ্ম-সচিব ও পরিচালক (জনসংযোগ) এসএম আসাদুজ্জামান শুক্রবার জানিয়েছেন, তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
ইসি জানিয়েছে, তৃতীয় ধাপে চূড়ান্ত লড়াইয়ে রয়েছেন মোট তিন হাজার ৩৪৪ জন প্রার্থী। এর মধ্যে মেয়র পদে ২২৯ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৫৫ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে দুই হাজার ৩৬০ জন। তৃতীয় ধাপে ৬৪ পৌরসভায় ভোটের জন্য তফসিল হলেও ভোট হচ্ছে না ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও কুমিল্লার লাকশাম পৌরসভায়।
ত্রিশালে এক মেয়র প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় সেখানে ভোট হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। আর কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভায় মেয়র, সারাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে সেখানে ভোট নেয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, কুমিল্লার লাকসাম ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে একক প্রার্থী থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এ ধাপে মোট ৩৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিন জন মেয়র, নয় জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ২৫ জন সাধারণ কাউন্সিলর রয়েছেন।
এর আগে দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর একক প্রার্থী হওয়ায় মেয়র পদে চার জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
নির্বাচনি পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহলে রয়েছে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে। তাদের সঙ্গে রয়েছেন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
চার স্তরের নিরাপত্তা থাকবে ভোটের পরের দিন পর্যন্ত। শনিবার সকালে ভোটগ্রহণের আগে প্রত্যেক কেন্দ্রে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনি উপকরণ পাঠানো হয়। কমিশনের শেষ মুহূর্তের নির্দেশনায় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে দ্রুত ফল পাঠাতে বলা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত পাঁচ ধাপে পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। প্রথম ধাপে ২৪টি পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হয় ২৮ ডিসেম্বর। গত ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৬০টি পৌরসভায় ভোট হয়। তৃতীয় ধাপে ৬২টি পৌরসভায় ৩০ জানুয়ারি ভোট হতে যাচ্ছে।
চতুর্থ ধাপে ৫৭ পৌরসভায় ভোট হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ও পঞ্চম ধাপে ৩১ পৌরসভায় ভোট হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি।
আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যেই পৌরসভার ভোট করতে হয়। স্থানীয় সরকার আইন সংশোধনের পর ২০১৫ সালে প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট হয় পৌরসভায়।