কবির চোখ কি দূরত্ব দেখার চোখ? মানসচোখ তো থাকেই। যা আছে সেটা দেখা, যা নেই তা দেখা, যা হতে পারে তা-ও দেখা- সেটা প্রকৃত কবির পক্ষে সম্ভব।
জীবনানন্দ দাশ ছিলেন সেই কবি, যাঁর মানসভ্রমণ ছিল বিস্তারিত। জন্মেছেন বাংলায়, তাই স্বাভাবিক উচ্চারণে বলতে পেরেছেন, ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি…’। কিন্তু কবি যখন বলেন, ‘পৃথিবীর অলিগলি বেয়ে আমি কতদিন চলিলাম’, তখন আমরা বুঝে নিই, এটা কবির মানসভ্রমণ।
কবির জন্মস্থান বাংলাদেশের বরিশাল। শেষ জীবন কেটেছে ভারতের কলকাতায়। মাঝে দু’বার গিয়েছেন দিল্লি। এই হলো কবির অবস্থান ও ভ্রমণ এলাকা। তাহলে যে তাঁর কবিতায় পাওয়া যায়, ‘হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,/ সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে/ অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে/ সেখানে ছিলাম আমি; আরোধ দূর অন্ধকার বিদর্ভ নগরে;…’। জীবনানন্দ দাশের বেঁচে থাকা শেষ হয়েছে ৫৪ বছরে। কিন্তু তিনি ‘হাজার বছর’ পৃথিবীর পথে হেঁটেছেন। তিনি মালয় সাগরে গিয়েছেন, দেখা হয়েছে বিম্বিসার অশোকের সঙ্গে। তাঁর কবিতায় রহস্যচিহ্ন হয়ে থাকা বনলতা সেনের চুল হয়ে উঠেছে ‘অন্ধকার বিদিশার নিশা’, ‘মুখ তার শ্রাবন্তীর কারুকার্য’। ইতিহাসের পৃষ্ঠায়, ভূগোলের স্থানে স্থানে ছিল কবির মানসভ্রমণ। সেই ভ্রমণের আলোয়, অন্ধকারে তিনি দেখেছেন আগামীর ভ‚প্রকৃতি, মানুষ, মানুষের জেগে ওঠা এবং অকাল ঘুমের ক্লান্তি।
দুই.
জীবনানন্দ দাশের উপলব্ধিতে এসেছে সেই ‘পৃথিবীর গভীরতর অসুখ এখন’। আমরা দেখছি চীনের উহানে শুরু হয়েছিল ‘কোভিড-১৯’ নামের মহামারিটি। ২০১৯ গেল, ২০২০ গেল, ২০২১ যাচ্ছে, সেই ‘করোনা’ যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। অথচ চীন নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, কিন্তু অন্যরা পারছে না। পৃথিবীর প্রায় সব দেশ ও অঞ্চল করোনার বিকট থাবায় নাকাল।
বিশ্ববাসীর জন্য এ এক মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা। এতদিন হয়ে যাচ্ছে, এখনো করোনার অনেক বিষয় স্পষ্ট নয়। প্রথম দিকে তো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানুষের করুণ মৃত্যু হয়েছে। দিন যাচ্ছে, কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে মানুষ শিখছে। পৃথিবীর বিত্তশালী দেশগুলোও করোনা সামাল দিতে পারছে না। অর্থ, প্রযুক্তি ও দৃঢ় চিকিৎসাব্যবস্থা হাতের মুঠোয় থাকার পরও তাবড় তাবড় দেশ অসহায় হয়ে পড়েছে। মৃত্যুর পেছনে মৃত্যু, লাশের পাহাড়। করোনার ভয়াবহতা নিয়ে মানুষ এতটাই শঙ্কিত ছিল, প্রিয়জনের মরদেহ দেখার মমতাও ত্যাগ করতে হয়েছে। বাবা মারা গেছেন, সন্তান আসেনি, স্বামীর মরদেহ রেখে লাপাত্তা হয়েছে স্ত্রী। সেবা দিতে গিয়ে কত চিকিৎসক মারা গেছেন। মরা পড়ে আছে, কাছে ভেড়ার লোক নেই। এমন পরিস্থিতি সারা পৃথিবীতে।
অসহায়ত্ব মানুষের স্বভাব নয়। করোনার ভয়াবহ ধাক্কায় বিচলিত হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত আছে। অনেক দেশ এরই মধ্যে ভয়াবহ এই মহামারি রোধে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছে। টিকা আবিষ্কার সেই সাফল্যের সোপান। কিন্তু টিকা এখনো সহজলভ্য হয়নি। আবিষ্কারক দেশগুলো প্রথমে নিজেদের প্রয়োজন মেটাচ্ছে, অন্য দেশে রফতানিটা পরের প্রশ্ন। টিকা নিয়ে স্বস্তির জায়গা এখনো তৈরি হয়নি। প্রয়োজন বা চাহিদার তুলনায় টিকার উৎপাদন কম। আর একটা নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ-প্রতিরোধী টিকা চাইলেই তৈরি করা যায় না। অনেক ধাপ পেরিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয়। তারপরও অনেক কম সময়ের মধ্যেই করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। টিকা উৎপাদক দেশের পাশাপাশি অনেক ধনী দেশে টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও অনেক দেশ টিকা পায়নি।
টিকা নিয়ে বাণিজ্য হচ্ছে, ক‚টনীতি হচ্ছে, কেউ কেউ বলছেন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এসব অভিযোগ একেবারে নাকচ করা যায় না। হচ্ছেই তো। কোনো দেশের হাতে উদ্বৃত্ত টিকা আছে, ব্যবহার করার মতো লোক নেই।
করোনার টিকা একটি উৎপাদিত পণ্য। এটি নিয়ে বাণিজ্য হবে। কিন্তু এটিকে যেকোনো পণ্যের সঙ্গে তুলনা করলে হবে না। এটাকে শুধু মুনাফা অর্জনের পণ্য বানানো অমানবিক। ভয়াবহ মহামারির সংক্রমণ রোধ করার জন্যই এর ব্যবহার। আর করোনা একটি বৈশ্বিক মানবিক সমস্যা। বাণিজ্যিক এবং ক‚টনৈতিক দৃষ্টকোণ থেকে না দেখে বিষয়টিকে দেখতে হবে মানবিক সহযোগিতার উদারতা দিয়ে। রাষ্ট্র নাগরিকের স্বাস্থ্যঝুঁকি দূর করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু করোনা তো বৈশ্বিক সমস্যা। কোনো রাষ্ট্র এককভাবে নিরাপদ হওয়ার সুযোগ নেই। ভৌগোলিক সীমানা দিয়ে মহামারির সংক্রমণ ঠেকানো যায় না। বিশেষজ্ঞরা দৃঢ় মত দিয়েছেন, একজন করোনা রোগী অবশিষ্ট থাকলেও পৃথিবী নিরাপদ নয়। পৃথিবীর অনেক দেশে করোনার সংক্রমণ কমার খবর আসে, কিন্তু ক’দিন যেতে না যেতেই আবারও করোনা মহামারির নতুন আক্রমণ। মাত্র একদিন ‘শূন্য মৃত্যু’ দেখে হাঁফ ছাড়ার পরের দিনই অধিক-সংখ্যক মানুষের মৃত্যুতে বিচলিত হওয়ার নজিরও তো আছে। কাজেই একক দেশ বা অঞ্চল হিসেবে নিরাপদ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাঁচতে হবে সবাই মিলে, সবাইকে নিয়ে।
তিন.
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ১২ দিনের মাথায় প্রথম মৃত্যু। সেই থেকে আমরা করোনার ভয়াবহতা দেখে আসছি। মৃত্যুর মিছিল থামছে না। মধ্যে কয়েক দিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে করোনার ছোবল আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। পৃথিবীর অনেক দেশে এমনটি হতে দেখা গেছে। বলা হচ্ছে, করোনা মহামারির প্রথম ঢেউয়ের পর এখন দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। কোনো কোনো দেশে চলছে তৃতীয় ঢেউ।
বাংলাদেশে প্রথম ঢেউ শেষে দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আক্রান্তের হার ৫ শতাংশের নিচে নামলে বলা যাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে। বাংলাদেশেও তা-ই হয়েছিল। কিন্তু বেশি দিন টেকেনি। আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়তে থাকে। এর জন্য আমরাই দায়ী। সব বিধিনিষেধ শিথিল করা হলো। সর্বত্র স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আনন্দ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার সাবধান করেছেন। আমরা কানে তুলিনি। পরিণতি যা হওয়ার তা-ই হলো।
বিধিনিষেধ নিয়ে আমাদের নানা মনস্তত্ত্ব। কেউ বলছেন ‘লগডাউন’। কেউ লগডাউনের আগে ‘বিশেষ’, ‘কঠোর’ শব্দ ব্যবহার করছেন। যা-ই হোক, বিধিনিষেধ বা লগডাউন দিয়ে শক্ত অবস্থানে থাকতে পারিনি। আর এটাও তো সত্য, লগডাউন কোনো দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা নয়। সব কিছু বন্ধ হয়ে গেলে জীবিকার চাকাও থেমে যায়। জীবন ও জীবিকার সমন্বয় দরকার।
এখানেও কথা আছে। সরকার কিন্তু ঢালাওভাবে সব কিছু খুলে দেয় না। গত রমজানের সময় কী হলো! দাবি উঠল, ঈদ মৌসুমে দোকানপাট খোলার, গণপরিবহন খোলার। দাবির যৌক্তিকতা বিবেচনা করে দোকান, মার্কেট, শপিংমল, গণপরিবহন অবারিত করা হলো। সংশ্লিষ্টরা সরকারের সব শর্ত সানন্দে মেনে নিলেন। বেঁধে দেয়া সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা রাখা যাবে, গণপরিবহন চলবে আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে। পরিবহন মালিকদের দাবি, ভাড়া বাড়াতে হবে। তা-ই হলো। কিন্তু ‘কেউ কথা রাখেনি’। রাতারাতি গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ল ৬০ ভাগ। অর্ধেক যাত্রী তো দূরের কথা, আগের মতো ঠাসাঠাসি, বাদুড়-ঝোলা যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন সদর্পে চলতে থাকল। গাদাগাদি ক্রেতার ভিড়ে দোকানপাট খোলা থাকল মধ্যরাত পর্যন্ত। দোষ এলো ক্রেতাদের ওপর- তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। সরকারের সব চেষ্টা পাশ কটিয়ে ফেরি পারের যে দৃশ্য দেখা গেল, ভয়াবহ বললে কম বলা হয়। ভিড়ের সঙ্গে ভিড় লেপ্টে আছে। ‘তিল ঠাঁই আর নাহি রে’। ভিড়ের ভয়াবহতায় পায়ে চাপা পড়ে মানুষ মারা গেল। কোথায় স্বাস্থ্যবিধি! কোথায় করোনার ভয়!!
করোনা নিজে চলতে পারে না, সে চলে মানুষের চলাচল ধরে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা যথাসম্ভব ঘরে থাকতে বলছেন। চলাচল সীমিত রাখতে হবে। চলতে হবে ভিড় এড়িয়ে।
প্রথম দিকে করোনা মহামারি বিষয়ে মানুষের ভীতি যেমন ছিল, ছিল নিয়ম মানার অনেক অনুষঙ্গ। চোখে বিশেষ চশমা, টুপি, হাতে গ্লাভস, মাস্ক তো ছিলই। এখন মাস্কের ওপর বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। বারবার হাত ধুতে হবে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শুধু মাস্ক পরে নিজেকে নিরাপদ রাখা যায়, সংক্রমণের ছড়ানো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আমরা সহজসাধ্য এ কাজগুলো করি না।
করোনা দ্রুত বিস্তার লাভ করতে পারে। এখনো এ মহামারির পরীক্ষিত চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি। তাই পুরনো প্রবাদটিকেই গভীরভাবে মান্য করতে হবে- ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম’। পরিপূর্ণভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হলো প্রতিরোধের প্রধান হাতিয়ার। দ্বিতীয়টি হলো, টিকা প্রয়োগ। করোনার আগে থাকতে হবে। ওর পেছনে পড়া বিপদের বিষয়। আক্রান্ত হলে চিকিৎসা করাতে হবে। কিন্তু হতে না দেয়াটাই জরুরি। প্রথম হাতিয়ার ব্যবহারে আমাদের উদাসীনতা অপরিমেয়। মাস্ক না পরার মধ্যে অনেকে ‘বাহাদুরি’ অনুভব করে। কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না, নিজেরা ভয়াবহ সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ছে। দুঃখজনক পরাজয়ই তাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
আমাদের দেশে করোনা প্রতিরোধের টিকা কার্যক্রম ভালোভাবে শুরু হলেও মাঝে ছন্দপতন ঘটেছে। এর বাস্তব কারণ আছে। তবে সব সামাল দিয়ে টিকা প্রয়োগে গতি আসছে। উপহার ও কেনার পাশাপাশি নিজেদের টিকা উৎপাদনে যেতে হবে।
সিদ্ধান্তহীনতা, ভুল সিদ্ধান্ত, অদক্ষতা- এসব ডিঙিয়ে করোনা মোকাবিলায় আমরা অনেক এগিয়েছি। কিন্তু যেতে হবে অনেক দূরত্বের পথ। সংক্রমণের গতিপথটা বিচ্ছিন্ন করতে হবে। যত বেশি মানুষকে করোনা পরীক্ষার আওতায় আনা যাবে, এর প্রতিরোধ এবং প্রতিকারের কর্মপন্থা নির্ণয় তত সহজ হবে।
ব্যক্তিবিশেষই রোগে আক্রান্ত হয়। কিন্তু মহামারি আর ব্যক্তির মধ্যে থাকে না। করোনা মহামারি এখন সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা প্রতিরোধ দায়িত্ব সবার। সরকারের নির্দেশনা মেনে নিজেদের চলাচল সীমিত রাখতে হবে।
এখানে একটি প্রশ্ন এসে যায়, যারা ‘দিন আনে দিন খায়’ তারা কী করে থাকবে? অবশ্যই এই শ্রেণির মানুষকে ঘরে রাখতে হলে তাদের পেট চলার ব্যবস্থা রাখতে হবে। সরকার চেষ্টা করছে। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারি কর্মকতা, জনপ্রতিনিধি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় নেতা, ছাত্র-যুবসমাজ- সবার সমন্বিত উদ্যোগে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করা যাবে। অতীতে, এদেশের মানুষ সাহসের সঙ্গে প্রাকৃতিক ও অন্যান্য দুর্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দুঃখজনক হলেও সত্য, করোনা মহামারির এই দুর্যোগে আমরা আমাদের সেই ঐতিহ্যের ধারা বহাল রাখতে পারিনি। কিছু ব্যতিক্রম অবশ্য আছে। সমাজের বিত্তবানরা সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে এলে দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে।
চার.
করোনায় আমরা বিপন্ন হয়ে পড়েছি, এটা সত্য। অন্যদিকে এই করোনাকাল আমাদের অনেক কিছু দেখিয়েছে, শিখিয়েছে। এটা একটা স্বাস্থ্যযুদ্ধ। যুদ্ধ চলছে। মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া। এটি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। জানতাম দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। সরকারি হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালেও ভালো মানের চিকিৎসা হয়। আমাদের চিকিৎসকরা মেধা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতায় পিছিয়ে নেই। সবই সত্য। করোনকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থার দিকে মানুষের চোখ রয়েছে। দেখা যাচ্ছে অনেক অন্তঃসারশূন্যতা। অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, দুর্নীতির চিত্র ভয়াবহ। এ মন্ত্রণালয়ের একজন গাড়িচালক কী করে ঢাকায় আলিশান বাড়ির মালিক হয়? ব্যবসার নাম করে এ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল টাকা গায়েব করা হয়েছে। অভিযোগ আছে, এসব লুটের সঙ্গে একশ্রেণির কর্মচারী-কর্মকতা জড়িত।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি প্রশংসিত হয়েছে। অনেক দুর্নীতিবাজ ধরা পড়েছে। সবাই ধরা পড়বে, বিচার হবে- এটাই জনপ্রত্যাশা।
এত এত হতাশার মধ্যেও অনেক আশা জাগানিয়া উদাহরণ আছে। স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিতরা মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। অনেকের বেদনাজনক প্রয়াণ ঘটেছে। চ‚ড়ান্ত ভরসার কথাটি- আমাদের দেশটির নাম বাংলাদেশ। জাতি বাঙালি। আমাদের একজন নেতা ছিলেন, নাম শেখ মুজিবুর রহমান, চিরপ্রিয় বঙ্গবন্ধু। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে যুদ্ধ করে অর্জিত এই দেশ। এ দেশের মানুষের কোনো পরাজয় থাকতে পারে না। করোনা মহামারিও আমরা জয় করব। রবীন্দ্রনাথ থেকে ধার করে বলি, ‘মুখর হবে সকল আকাশ আনন্দময় গানের রবে’।
লেখক: ফারুক মাহমুদ/ কবি, সাংবাদিক